কুমিল্লায় গরুর নাম মেসি, সম্রাট, বাঘা, ব্ল্যাক ডায়মন্ড
কুমিল্লার শহরতলীর শাসনগাছা এলাকার সফল খামারী মো: আসলাম সুলতান। ২০০৩ সালে তিনি সুলতান এগ্রো নামে একটি খামার প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। আদর্শ সদর উপজেলার শাসনগাছা বুড়িচং রোডে উত্তর পাড়ায় একটি এবং আড়াইওড়ায় আরেকটি খামার প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার দুই খামারে বর্তমানে ৩১টি গরু রয়েছে। শাসনগাছার খামারে নিউজিল্যান্ড, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ইন্ডিয়ার সংকর জাতের ১২টি গরু রয়েছে। সেই গরুগুলোর রয়েছে আবার ভিন্ন ভিন্ন নাম। তার মধ্যে কুমিল্লার হামজা, গোল্ডভার, মেসি, রকি, বাঘা, ব্ল্যাক ডায়মন্ড, কম্বল অন্যতম। সবগুলো গরুর বয়স চার বছর থেকে বেশি এবং কোরবানির জন্য যথাযথ।
কুমিল্লার হামজা নামের বিশাল দেহী গরুটির ওজন ১৩শত কেজিরও বেশি। যার দাম চাওয়া হচ্ছে ১১ লাখ টাকা। আরেকটি গরুর নামকরন করা হয় ফুটবল তারকার লিওনেল মেসির নামানুসারে মেসি। মেসির ওজন ১১ শত কেজি, দাম চাওয়া হচ্ছে সাত লাখ টাকা। আড়াইওড়া ফার্মের গরুর সর্বনিম্ন দাম ৭০ হাজার থেকে তিন লাখের মধ্যে।
সুলতান এগ্রোর বেশিরভাগ গরুই অনলাইনে বা খামারে এসে কিনে নিয়ে যান ক্রেতারা। দীর্ঘ ১৯ বছরে তৈরি হয়েছে বিশেষ পরিচিত ক্রেতা।
উদ্যোক্তা আসলাম সুলতান জানান, তার খামারের গরুগুলোকে খড়ের সাথে গমের ভূসি, ধানের কূড়া ও ঘাস খাওয়ানো হয়। তাছাড়া, চনাবুট, গমের খোসা, মটর, ধান, ভূট্টা, মুসরীর সমন্বয়ে মেশিনের মাধ্যমে পাউডার তৈরি করে খড়ের সাথে খাওয়ানো হয়। দেশের উত্তরবঙ্গ থেকে এসব গরু সংগ্রহ করে লালন পালন ও স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে মোটাতাজাকরণ করা হয়।
জেলার চৌদ্দগ্রামে ব্রাদার্স এগ্রোতে কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ১০ টি গরু। এর মধ্যে প্রায় ২০ মণের ব্রাহামা জাতের রয়েছে একটি গরু। খামার মালিক এরশাদ হোসেন গরুটির নাম দিয়েছেন ‘সম্রাট’। পৌর এলাকার নবগ্রাম পশ্চিম পাড়ায় অবস্থিত ব্রাদার্স এগ্রোতে ওই গরুটি দেখতে প্রতিদিনই উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে সকল ক্রেতার নজর কাড়বে গরুটি।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে এরশাদ হোসেন বাসসকে জানান, গৃহপালিত দেশী শাহিওয়াল জাত থেকে চৌদ্দগ্রাম সরকারি পশু হাসপাতালের সহযোগিতায় বিগত ২ বছর ৮ মাস পূর্বে সম্রাটের জন্ম হয়। প্রাকৃতিক উপায়ে এ পর্যন্ত ব্রাহমা জাতের ‘সম্রাট’ গরুটি লালন-পালন করছি। বর্তমানে গরুটির ওজন প্রায় ৮ মণ। এ সময়ে গরুটিকে স্বাভাবিক খাবার সবুজ ঘাস, ভূষি, খৈল, ভুট্টা, খড়ের পাশাপাশি আপেল, মাল্টাও খেতে দেওয়া হয়েছে। সম্রাটকে এ পর্যায়ে নিয়ে আসতে অন্তত ৩ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে বলেও তিনি জানান।
কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে গরুটির যতœ আরও বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের কর্মকর্তারা সহযোগিতা করেছেন। গরুটি ৮ লাখ টাকা দাম চাইবেন বলে জানান। এছাড়া খামারে আরও ৯টি গরু কোরবাণী জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মুজিবুর রহমান বাসসকে বলেন, আমাদের সার্বিক তত্বাবধানে ব্রাহমা জাতের ‘সম্রাট’ গরুটি পালন করেছেন এরশাদ হোসেন। গরু ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি।