কুবিতে সরকারের নির্ধারিত সময় পরে শোভাযাত্রা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ঃ সরকারের নির্দেশনার নির্ধারিত দিন উপেক্ষা করে সমালোচনার মুখে পড়ে নানা অব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে অবশেষে বঙ্গবন্ধুর ৭মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি দেওয়ায় আনন্দ শোভাযাত্রা পালন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার সরকারের নির্দেশ থাকলেও দুই দিন পরে সোমবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আলী আশরাফের নেতৃত্বে এ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। আনন্দ শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু হয়ে শালবন বিহার পর্যন্ত গিয়ে আবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
জানা যায়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের অংশ ঘোষণা করায় শনিবার সারা দেশে এক যোগে আনন্দ শোভাযাত্রা পলেনে সরকারের নির্দেশনা ছিল। নির্ধারিত দিনে সারা দেশে কর্মসূচি পালন হলেও সরকারের নিদের্শনা উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন শনিবার আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন না করে সমালোচনায় পড়ে। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ এমন অযুহাত দিয়ে গা বাঁচাতে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ শোভাযাত্রা পালন করা হয়। এদিকে গত বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত আনন্দ শোভাযাত্রার বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তি রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ ও শাখাসমূহে পাঠানো হয়। কৌশলে এ বিজ্ঞপ্তি বিলম্ব করে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত ঐ বিজ্ঞপ্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কোন সংগঠনকে দেওয়া হয়নি। এদিকে আনন্দ শোভাযাত্রার চলাকালে বঙ্গবন্ধুর ৭মার্চের ভাষণ প্রচার করেনি প্রশাসন। তবে দ্বায়সারাভাবে দুপুরে একটি মাইকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচার করা হয়। এ বিষয়ে পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না বলে জানা যায়।
প্রসঙ্গত, শনিবার শোভাযাত্রা পালনের নির্দেশনা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে একটি চিঠি দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শিক্ষক সমিতির নামে উপাচার্যের কাছে মিথ্যাচার করে সরকারি সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে শনিবার শোভাযাত্রার আয়োজন করেনি বলে শিক্ষক সমিতির কয়েকজন নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাংবাদিকদের জানান।
শিক্ষক সমিতির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জামায়াতিকরণের লক্ষ্যে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার ও আনন্দ শোভাযাত্রা ভন্ডুলের প্রচেষ্টা চালিয়ে নির্ধারিত সময়ে কর্মসূচি পালনে পদক্ষেপ নেননি।’
এদিকে ভিন্ন এক অজুহাত দিয়ে রেজিস্ট্রার মো: মজিবুৃর রহমান মজুমদার বলেন, ‘শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দিন হওয়ায় আনন্দ শোভাযাত্রা আয়োজন সম্ভব হয়নি।’ রাষ্ট্রের ঘোষিত অনুষ্ঠান বন্ধের দিন পালনে কোন বাঁধা আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দেননি রেজিস্ট্রার। সরকারি সিধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সোমবার আনন্দ শোভাযাত্রা করার বিষয়টি উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের শাস্তি প্রদান জরুরী এবং তাদের রাজনৈতিক আদর্শ খুঁজে বের করাও জরুরী বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা।