বড় ছেলের পরে চলে গেল ছোট ছেলেও, মায়ের চিৎকার নির্বাক বাবা

কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে সমুদ্র সৈকতের পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়েছিলেন কলেজছাত্র হিমেল হোসেন। ঘটনার চার দিন পর গতকাল শুক্রবার সকালে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন তিনি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে শুক্রবার লাশ গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মাঝুখানে পৌঁছায়।

সকাল ১০টার দিকে জানাজা শেষে বড় ভাইয়ের কবরের পাশে হিমেলের লাশ দাফন করা হয়েছে। এর আগে লাশ বাড়িতে পৌঁছালে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। ঘটনার পর থেকে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ছোট ছেলেকে হারিয়ে মা-বাবা পাগলপ্রায়। স্বজনদের সঙ্গে বাড়িতে সান্ত্বনা দিতে আসা লোকজনকেও কাঁদতে দেখা গেছে।

এ সময় মা হাসনা বানুর কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ। তিনি বলছিলেন, ‘বড় ছেলে মরার পর তোকে বুকে নিয়ে বেঁচে ছিলাম। এখন তুইও চলে গেলি। আমি কী নিয়ে বাঁচব। আমার বুকের ধনকে ফিরিয়ে দাও।’ এ সময় বাবা আক্কাস আলী বাকরুদ্ধ হয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলেন। হিমেলের মামা জাবেদ হোসেন বলেন, এভাবে যেন কোনো মায়ের বুক খালি না হয়। এ কথা বলতে বলতে তিনিও কান্নায় ভেঙে পড়েন।

গত মঙ্গলবার বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজারের লাবণী বিচে সমুদ্রে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হন হিমেল। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঁকখালী এলাকা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হিমেল হোসেন (২২) গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মাঝুখান এলাকার আক্কাস হোসেনের ছেলে। তিনি স্থানীয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরদিন গত রোববার তিন বন্ধু হিমেল, পাপ্পু ও আরমান কক্সবাজার বেড়াতে যান। মঙ্গলবার বিকেলে লাবণী বিচে গোসল করতে সমুদ্রে নামেন হিমেল ও পাপ্পু। একপর্যায়ে জোয়ারের পানির ঢেউ তাঁদের টেনে নিয়ে যায়। এ সময় তীরে দাঁড়িয়ে থাকা আরমান বিষয়টি টুরিস্ট পুলিশকে জানান।

পুলিশ ও কোস্টগার্ড কর্মীরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর পাপ্পুকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করলেও হিমেলকে খুঁজে পাননি। তিন দিন পর বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঁকখালী এলাকা থেকে হিমেলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেন।

আরো পড়ুন