সবজি হিসেবে কুমিল্লায় জনপ্রিয়তা বাড়ছে কচু ফুলের
দেখতে সুন্দর ও খেতে সুস্বাদু হওয়ায় কুমিল্লায় দিন দিন বাড়ছে কচু ফুলের চাহিদা। ইতোমধ্যেই সবজি হিসেবে এই ফুলের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ছে চর্তুদিকে। জেলার বরুড়া উপজেলায় এ ফুলের চাষ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। জেলাব্যাপী কচু ফুলের চাহিদা থাকলেও উৎপাদন এখনো সেভাবে হচ্ছে না বলে জানিয়েছে কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- কচুর পাতা, ডাটা, লতি, শিকড় সবই সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। তবে কচুর ফুল আমাদের দেশে এখনো সেভাবে কেউ খায়নি। ধিরে ধিরে মানুষের মধ্যে এই ফুল সবজি হিসেবে খাওয়ার চাহিদা বাড়ছে।
বরুড়া উপজেলার আগানগর গ্রামের কৃষক আবদুল লতিফ জানান, কচুর ফুল রান্না করাটা কঠিন নয় বরং অনেক সহজ। এই ফুল খেতেও অনেক মজা। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি কচুর ফুল বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে। কচুর ক্ষেত থেকে এখন শত শত কেজি কচুর ফুল সংগ্রহ করতে পারছেন কৃষকেরা। বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকদের আয় বাড়ছে।
একই গ্রামের অপর কৃষক আলী মিয়া জানান, কচু চাষে কৃষকরা খুবই ভালোভাবে লাভবান হচ্ছেন। কৃষকরা কচু চাষ করে প্রথমে লতি বিক্রি করছেন, দ্বিতীয় ধাপে তারা কচুর ফুল বিক্রি করছেন। তৃতীয় ধাপে কচু বিক্রি করছেন। মোটকথা এক কচু থেকে তিনবার আয় পাচ্ছেন চাষিরা। বর্তমানে কচুর ফুল মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাজারে এর দামও অনেক ভালো।
বরুড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, কচুর ফুল খেতে অনেক মজা। কচুর ফুলে রয়েছে অনেক পুষ্টিকর গুণাগুণ।
তিনি আরও জানান, বরুড়ায় ব্যাপক হারে কচুর চাষ হয়। বিশেষ কচুর লতি। বরুড়ার কচুর লতি দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে রপ্তানি হয়। সম্প্রতি কচুর ফুলও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আশা করছি এটিও খুব দ্রুত দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আইউব মাহমুদের কাছে কচুর ফুল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি একটি আয়রন সমৃদ্ধ সবজি। এটি রক্ত শূণ্যতা দূর করে। এই ফুল এখন সবজি হিসেবে খাবার তালিকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কুমিল্লার বরুড়া ও চান্দিনা ছাড়া সেভাবে কচুর ফুল বানিজ্যিকভাবে এখনো চাষ হতে দেখা যাচ্ছে না। তবে এই ফুলের চাহিদা বাড়ছে। কুমিল্লায় কয়েক টন কচুর ফুল উৎপাদন হচ্ছে বলেও জানান তিনি।