ঘুরে আসুন কুমিল্লা রুপসাগর থেকে

জেলার রুপ সাগরের প্রাকৃতিক পরিবেশ মনোমুগ্ধকর। এছাড়াও সবুজ প্রকৃতির অপরূপ শোভায় সুশোভিত কুমিল্লায় বাড়ছে পর্যটকদের আনাগোনা। ঢাকা-চট্টগ্রামের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত প্রাচীন এ জেলাজুড়ে রয়েছে অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন স্থান। বিশেষ করে কোটবাড়ি শালবন বিহার, ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি, রুপসাগর, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বার্ড, ময়নামতি জাদুঘর ও আশপাশের এলাকা ঘিরেই ভ্রমণ পিপাসুদের আগ্রহ বেশি লক্ষ্য করা যায়। যোগাযোগ মাধ্যম সহজ হওয়ার ফলে কুমিল্লায় সারাবছরই দেশ-বিদেশের পর্যটক দর্শনার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ে।

অপরুপ রুপের সৌন্দর্য কুমিল্লার রুপ সাগর। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এর এরিয়ার নাজিরা বাজার এলাকায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত পরিবেশে কুমিল্লার রুপ সাগর অবস্থিত। ছোট টিলার মত উচু জায়গা, সাথে বিরাট বড় দিঘী, দিঘীর পাড়ে পর্যটকদের বসার জন্য ব্যাঞ্চ, হরেক রকমের ফুলের বাগান যে কারোই মন জুড়িয়ে যায়। সাধারণ দর্শণার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করতে নাম ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার লিখে মেটাল ডিরেক্টর দিয়ে শরীর তল্লাশী করে যেতে হয়। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকার কারণে নিরাপদ। রুপ সাগরের প্রাকৃতিক পরিবেশ মনোমুগ্ধকর। সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশের ছোয়ায় অপরুপ সৌন্দর্যে সৌন্দর্য মন্ডিত হয়ে উঠেছে কুমিল্লার রুপ সাগর।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের পহেলা এপ্রিল এটি সংরক্ষণ, পুনঃসংস্কার ও আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে এরিয়া কমান্ডার এবং জিওসি, ৩৩ পদাধিক ডিভিশন মেজর জেনারেল মোঃ জাহিদুর রহমান, এনডিই, এএফ, ডব্লিউসি,পিএসসি, জি এর নির্দেশনায় ও পৃষ্টপোষকতায় সদর দপ্তর ৪৪ পদাধিক ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে ‘রুপ সাগর দিঘি উন্নয়ন প্রকল্প ’ এর কাজ শুরু হয়। কুমিল্লা সেনানিবাসের অভ্যন্তরে প্রকৃতিক পরিবেশে রুপ সাগর কুমিল্লার ও কুমিল্লার বাইরের পর্যটকদের কাছে ভালো লাগতে শুরু করেছে। সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকার কারণে রুপ সাগর পর্যটকদের কাছে সেইফটি জায়গা হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বিনোদন প্রেমীদের ভিড় বাড়ছে। কুমিল্লার চান্দিনার সেই প্রত্যন্ত অঞ্চল মহিচাইল থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে রুপসাগরে এসেছেন নয় বছর বয়সী শিশু নাবিল। এখানে এসে কেমন লাগছে এমন প্রশ্নের উত্তরে সে বলে, দীর্ঘদিন করোনার কারণে ঘরে বন্দী থাকার পর অনেকদিন পর ঘুরতে এসে ভালোই লাগছে। এখানখার পরিবেশ খুবই সুন্দর লাগছে। জাকির হোসেন। তিনি বেসরকারি একটি কোম্পানিতে কাজ করেন। তিনি বলেন করোনার কারণে বাচ্চ দের নিয়ে দীর্ঘদিন কোথাও যাওয়া হয়নি তাই তাদের নিয়ে এসেছি আজ দিনটা ভালোই কাটছে বলে জানান।

রুপ সাগরের অপরুপ সৌন্দর্য ও নয়নাভিরাম পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এই প্রকল্পের সাইকেল ট্র্যাক, ওয়াকওয়ে, জাহাজের আদলে ক্যাফেটেরিয়া, রুপ সাগর দিঘির মাঝখানে বিভিন্ন ভঙ্গির ২৫ টি ঘোড়ার সমন্বয়ে ভাস্কর্য, মিউজিক্যাল ফাউন্টেইন, বোট ক্লাব এর কাজ শেষ হয়েছে। শিশু পার্ক, বিভিন্ন ধরনের রাইড, ওয়াটার পার্ক, কটেজ, পিকনিক স্পট, মনোরেলসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানা যায়। দিঘীর চারপাশে পরিকল্পিত বাগান ছোট টিলার উপরে বসার জন্য বেঞ্চ, বিভিন্ন ধরনের ফুলগাছ, পাখির কিচির মিচির শব্দ রুপ সাগর দেখতে আসা পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

সাধারণ দর্শণার্থীদের জন্য টিকেটের মূল্য ৫০ টাকা এবং সেনাবাহিনীর পরিবার বা আত্মীয়দের জন্য ২৫ টাকা নির্ধারিত করা হয়েছে।

আরো পড়ুন