ফেন্সিডিল সেবনের ভিডিও ফেসবুকে , বিএনপির সভাপতির দাবি ‘কাশি ছিল’

গাজীপুরের শ্রীপুরে এক বিএনপি নেতার ফেন্সিডিল সেবনের একটি ভিডিও সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, শেখ মারুফ আহম্মেদ নামের এই নেতা একটি নিরিবিলি কক্ষে বসে আরাম করে ফেন্সিডিল সেবন করছেন। ভিডিওটি ২৬ এপ্রিল রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর তা দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং নানা মহলে সমালোচনার ঝড় উঠতে থাকে। এ ঘটনায় শ্রীপুর পৌর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

শেখ মারুফ আহম্মেদ শ্রীপুর পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এই পদটি পেয়েছেন পৌর সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী খানের মৃত্যু পর। তবে ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর তিনি দাবি করেছেন, তার সহকর্মী তাকে কাশির ওষুধ হিসেবে ফেন্সিডিল দিয়েছিলেন এবং তিনি সেটি পান করেছেন। তার ভাষ্যমতে, এটি তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ, যেখানে একটি পক্ষ তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এই ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।

অন্যদিকে, শ্রীপুরে বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা দাবি করেছেন, ভিডিওতে ফেন্সিডিল সেবনকারী ব্যক্তি আসলে শেখ মারুফ আহম্মেদই। তাদের মতে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন করছেন এবং মাদকাসক্ত। দলের ভেতরেও এ বিষয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। ভিডিওর একাংশে শেখ মারুফ আহম্মেদকে একটি নাইট ক্লাবে নারীদের সঙ্গে নাচতে দেখা যায়, যা আরো সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।

বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, যারা দলের দুর্দিনে পাশে ছিলেন, তারা এখন মূল্যহীন হয়ে পড়েছেন এবং দলের জন্য ত্যাগ না করা নেতারা এখন দলের ভাবমূর্তি নিয়ে খেলছেন। তাদের মতে, দলের শুদ্ধি অভিযান প্রয়োজন, এবং মাদক সেবনে জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বেপারী জানিয়েছেন, শেখ মারুফ আহম্মেদ সাবেক সভাপতি প্রয়াত কাজী খানের আত্মীয় হওয়ায়, তিনি পদাধিকার বলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হয়েছেন।

তবে অভিযুক্ত নেতা শেখ মারুফ আহম্মেদ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বলেছেন, তার সর্দি-কাশি ছিল, এবং আবুল নামের এক কর্মী তাকে কাশির ওষুধ এনে দেন, যা খেয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি এই ভিডিওটি সম্পাদিত (এডিটেড) দাবি করেছেন।

শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান ফকির জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে অবগত নন, তবে যদি এমন কিছু ঘটে থাকে, তবে জেলা কমিটি দলীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব ব্যারিস্টার চৌধুরী ইসরাক আহম্মেদ সিদ্দিকী জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না, তবে বিষয়টি তার নজরে আসলে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো পড়ুন