লেখো না, দেখো না, চুপ থাকো— নয়তো তোমার পরিণতি হবে তুহিনের মতো!

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে ব্যস্ততম সড়কে, শত মানুষের সামনে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। এটি নিছক কোনো হত্যাকাণ্ড নয়! বরং অপরাধীদের স্পষ্ট বার্তা— ‘সত্য বললে মরতে হবে।’
তুহিন কোনো অপরাধী ছিলেন না। তিনি ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার একজন নির্ভীক সংবাদযোদ্ধা। চাঁদাবাজদের মুখোশ উন্মোচন করেছিলেন ফেসবুক লাইভে— আর তার কয়েক ঘণ্টা পরই তার প্রাণ কেড়ে নিল সন্ত্রাসীরা।
তুহিনকে হত্যার ভিডিও দেখে আঁতকে উঠেছে সারাদেশের মানুষ। কীভাবে একটি ব্যস্ততম সড়কে শত শত মানুষের মাঝে একজন যুবককে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা যায়, সেই প্রশ্ন তুলেছেন সকলে।
এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে একটি ভয়ঙ্কর বার্তাই যেন আবারও দেওয়া হয়েছে— ‘লেখো না, দেখো না, চুপ থাকো— নয়তো তোমার পরিণতি হবে তুহিনের মতো!!’
আমরা ভুলে যাচ্ছি—সংবাদপত্র, টেলিভিশন বা অনলাইন মিডিয়া কেবল ব্যবসা নয়, এটাই রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। বিচার বিভাগ, নির্বাহী, আইনসভা আর গণমাধ্যম—এই চারটি স্তম্ভের ভারেই রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে থাকে। আর সেই স্তম্ভকে ধ্বংস করতে যারা ছুরি চালায়, তারা রাষ্ট্রবিরোধী। তারা সমাজের শত্রু।
আজ যদি তুহিনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হয়, কাল আরেকজন খুন হবে। এরপর আমরা শুধুই দেখব—কিন্তু লিখতে পারব না। কারণ ভয়, হুমকি, চাপ—সবই আমাদের কলমকে রক্তাক্ত করে তুলবে।
এখনই প্রতিবাদ না করলে, কাল শব্দ হারাবে, সত্য হারাবে, সাংবাদিকতা হারাবে!
তাই একজন সাংবাদিক হিসেবে বলতে চাই— এই হত্যার এমন কঠোরতম বিচার চাই যেন ভবিষ্যতে একজন সাংবাদিকের পরিণতিও আর তুহিনের মতো না হয়।