কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্মে অতিষ্ঠ রোগীরা
ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম ক্রমেই বেড়ে চলছে। তাদের খপ্পরে পরে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে রোগীরা। হাসপাতালের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজসে দালাল চক্রের সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে।
দালালরা তিনটি ক্যাটাগরিতে দালালী করে। ঔষধের দালালীতে দালাল সদস্যদের সংখ্যা বেশি। রক্তের দালালী করে ৩ থেকে ৪জন দালাল সদস্য। প্যাথলজির কাজে দালাল সদস্যদের সাথে কমিশনে কাজ করে হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। প্রতিনিয়ত টার্গেট থাকে রোগী ও রোগীর স্বজনদের। জরুরী বিভাগ থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত সব জায়গায় তাদের দাপট। বহি: বিভাগ, ইসিজি, এক্সরে, প্যাথলজি, মেডিসিন, শিশু ও ডায়েরিয়া ওয়ার্ডে প্রকাশ্যেই দালাল চক্রের বিচরণ। রোগীদেরকে কমমূল্যে ও বাকীতে ঔষধ দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যায় বাহিরে। রোগী বা তাদের স্বজনরা কোন অভিযোগ তুললেই তাদের উপর নেমে আসে নানা অত্যাচার ও হুমকি ধমকি। এদের খপ্পরে রোগীরা যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি হয়রানিও হচ্ছে।
সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শত শত রোগী, হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ একশ্রেণীর দালালের কাছে জিম্মি । দালালরা রোগী ও তাদের স্বজনদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে লোটে নিচ্ছে টাকা । এক শ্রেণীর দালাল রোগীদের নিয়ে যায় নিজেদের প্যাথলজি সেন্টারে লুটে নেয় অতিরিক্ত টাকা। আবার কখনও কখনও ডাক্তার ও নার্সরা তাদের নির্ধারিত প্যাথলজি সেন্টারে রোগীদের পাঠিয়ে দেয়। গাইনি বিভাগে ভর্তি হলে দেওয়া হয় একাধিক পরীক্ষা।
অনুসন্ধানে দেখা যায় এসব পরীক্ষা নিরীক্ষা হাসপাতালে করা হয়না। হাসপাতালে পর্যাপ্ত রক্ত থাকলেও রক্ত কিনতে হচ্ছে সিন্ডিকেটের কাছ থেকে। হাসপাতালে রক্ত নিয়ে চলে রক্ত বাণিজ্য আর এ কাজের সাথে হাসপাতালের একশ্রেণীর কর্মকর্তা -কর্মচারী জড়িত বলে জানা গেছে। দোষিত রক্তের কারণে গত সপ্তাহে তিনজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। প্রতি ব্যাগ রক্ত বিক্রি হচ্ছে ১হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫হাজার টাকায়। সময় ও তারতম্যের উপর নির্ভর করে মূল্য নেয়া হচ্ছে রক্তের। আর এই রক্তদাতা হচ্ছে একশ্রেণীর নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি।
কখনও কখনও দালালদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে রোগীর স্বজনরা এক হাজার টাকার সরঞ্জাম ৫ থেকে ৭ হাজার টাকায় কিনতে বাধ্য হচ্ছে । দালালরা এতই বেপরোয়া যে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করেই রোগীর লোকদের কে নানা রকম বুঝিয়ে তাদেরকে ঔষধ দিয়ে পরবর্তীতে চাপিয়ে দেয় অতিরিক্ত টাকা ৫০০টাকার ঔষধ ৫০০০টাকা দিতে হয়। দালালের সম্বয়ে রয়েছে সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা হাসপাতালের ভিতর পুলিশের চোখ ফাকি দিয়ে অনায়াসে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
এব্যাপারে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আবু ছালাম মিয়া জানান, হাসপাতালে যে সকল দালাল সদস্য রয়েছে তাদের নামের তালিকা দিন আমরা তাদেরকে ধরে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করব।