দাউদকান্দিতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুক্তিপন দাবী, আটক-৩
মো.জাকির হোসেনঃ প্রেমের ফাঁদে ফেলে শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে অশ্লীল ছবি তুলে ও ভিডিও করে মুক্তিপন দাবী করার অভিযোগে মা ছেলেসহ কথিত প্রেমিকাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে অশ্লীল ভিডিও ফুটেজ ও ছবি। কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ বাজারের বেকারী ব্যবসায়ীর অভিযোগে কথিত প্রেমিকা পারভীন আক্তার, সহযোগী কুহিনুর বেগম ও তাঁর ছেলে অভিকে গ্রেফতার করে দাউদকান্দি মডেল থানা । আজ সোমবার দুপুরে তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, থানায় করা একটি সাধারণ ডায়েরীর তদন্ত করতে গিয়েই বেরিয়ে এলো প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরন, মুক্তিপন দাবী ও শারীরিক নির্যাতনের লোমহর্ষক ঘটনা। গত ৬ জুলাই উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ বাজারের বেকারী ব্যবসায়ী জাকির হোসেন নিখোজ হন। ওইদিন রাতে তার স্ত্রী সেলিনা বেগম দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ডায়েরীর সূত্র ধরেই তদন্তে নামেন গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক শহিদুল আলম। এরই মধ্যে ৫লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে বেকারী মালিকের ম্যানেজারের নিকট ফোন আসে। ওই ফোন কলের সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে মাঠে নামেন আরো দুই চৌকশ পুলিশ অফিসার ওসি তদন্ত আব্দু নুর ও সহকারী উপ-পরিদর্শক ফিরোজ আহম্মেদ। এর মধ্যে অপহরণকারীদের সাথে বিকাশে কিছু টাকার লেনদেন করা হয়। পুলিশী তৎপরতার বিষয়টি আচঁ করতে পেরে অপহরনকারীরা পরদিন রাতে ছেড়ে দেয় ব্যবসায়ী জাকির হোসেন । ছাড়া পেয়েই তিনি দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
লিখিত অভিযোগ মতে পারভীন আক্তার প্রিয়ার সাথে রং নাম্বারে পরিচয়ের সূত্র ধরে দেখা করতে আসেন গৌরীপুরে। পরে পারভীন আক্তার তাকে নিয়ে গেীরীপুর ছাগল বাজারের আরজু মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া কুহিনুর বেগমের বাসায় যান। সেখানে কুহিনুর বেগমের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার ও ছেলে শফিকুর রহমান অভিসহ কয়েকজন জাকির হোসেনকে মারধর করে পারভীন আক্তারের সাথে অশ্লীল ভঙ্গিতে ছবি ও ভিডিও রেকর্ড করতে বাধ্য করে। এরপরই তার কাছ থেকে ৫লাখ টাকা দাবী করে , না হলে এই ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দেন। পুলিশ কুহিনুর বেগম ও তাঁর ছেলেকে আটক করলে তাদের দেয়া তথ্য মতে গৌরীপুর ভুলিরপাড়ের মোতালেব মিয়ার বাড়ী থেকে পারভীন আক্তার প্রিয়া(২৬)কে গ্রেফতার করেন। পারভীন আক্তার প্রিয়া লক্ষীপুর জেলার রামনগর থানার আইয়ানগর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। কুহিনুর বেগম চান্দিনা উপজেলার দলপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী সফিউল্লার স্ত্রী। পুলিশ তাদের কাছ থেকে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও উদ্ধার করে।
গৌরীপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্য আব্দুন নুর জানান, একটি সাধারণ ডায়েরীর তদন্ত করতে গিয়ে বড় একটি প্রতারক চক্রকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এ চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ প্রেমের ফাঁদে ফেলে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও রেকর্ড করে মোটা অংকের টাকা আদায় করতো। ভূক্তভোগীরা মানসম্মানের বা লোকলজ্জার কারণে আমাদের কাছে আসতো না। ৬জনের নামে মামলা করা হয়েছে ।