লাকসাম উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নানা সমস্যা জর্জরিত
লাকসাম সংবাদদাতাঃ ১৭০ বছরের পুরনো লাকসাম উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। জমিদার আমলে প্রতিষ্ঠিত ৭০ শতক জায়গার উপর বন জঙ্গলে ঘেরা পুরাতন টিন শেড ও বাশের বেড়া দিয়ে নির্মিত এক সময়কার দাতব্য চিকিৎসালয়টি এখন লাকসাম উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র নামে পরিচিত। উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি লাকসাম শহরের কেন্দ্রস্থলে হলেও আজও তাতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। আধুনিক স্থাপনা, সীমানা প্রাচীর কিছুই নেই। যে কোন সময় বেহাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে শত কোটি টাকা মূল্যমানের অরক্ষিত সরকারের বিশাল সম্পত্তি।
সরজমিনে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ঘুরে দেখা গেছে, গড়ে প্রতিদিন এ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রায় ৫০হতে ১’শজন রোগী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসে। এদের অধিকাংশই হতদরিদ্র নারী ও শিশু। দীর্ঘ ২/৩ যুগ যাবত এ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির উন্নয়নতো দূরের কথা পূনঃ মেরামত ও করা হয়নি। যার ফলে এ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চারদিকে বিরাজ করছে অপরিছন্ন নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে নেই বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ, যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটিও ময়লা মল মূত্রে ভরপুর। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদা মাটিতে সয়লাব হয়ে যায় রাস্তাটি। এছাড়াও স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির অভ্যন্তরে টয়লেট না থাকায় এর কর্মর্কতা-কর্মচারী এবং আগত রোগীরা আশেপাশে ডাঙ্গায় গিয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হয়। এতে মহিলা ও শিশূ রোগীদের দূভোর্গের সীমা থাকে না।
উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির দীর্ঘদিন যাবত উন্নয়ন কিংবা সংস্কার না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই কেন্দ্রটির ভিতরে পানি পড়ে নষ্ট হয় যন্ত্রপাতি ও ঔষধ পত্র। চিকিৎসক ও রোগীরা বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। ব্যাঘাত ঘটে চিকিৎসা সেবার। রোগী দেখার বেডটিও অনেক পুরাতর জীর্ণশীর্ন অবস্থায়। বেডের পাশে ঔষধের কাটুনে রাখতে হয় চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদী। অপরদিকে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার একটি কোয়াটার থাকলেও তা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে।
সরকারী হিসেব অনুযায়ী উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন মেডিকেল অফিসার, একজন মেডিকেল এসিষ্টেন্ট, একজন ফার্মাসিষ্ট, একজন সেকমো, একজন ভিজিটর, একজন এমএলএসএস, একজন আয়ার পদ রয়েছে। বর্তমানে একজন সেকমো ও একজন ভিজিটর ছাড়া বাকী পদগুলো দীর্ঘদিন শূণ্য রয়েছে। গত ৭/৮ মাস আগে একজন মেডিকেল অফিসার পোষ্টিং পেলেও একদিনের জন্যও তিনি ওই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে আসেননি।
লাকসাম উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভিজিটর খোদেজা বেগম জানান, সরকারী ভাবে বরাদ্দকৃত ঔষধ এ চিকিৎসা কেন্দ্রের আসা রোগীদের তুলনায় অনেক অপ্রতুল। যার ফলে রোগীদেরকে চিকিৎসা শেষে প্রয়োজনীয় ঔষধ দিতে হিমশিম খেতে হয়। বরাদ্ধকৃত ঔষধ দিয়ে সঠিক চিকিৎসা করলে সারা মাসের বরাদ্দ পাওয়া ঔষধ দিয়ে সর্বোচ্চ ২/৩ দিন চালানো সম্ভব। তাই অধিকাংশ ঔষধই রোগীদের বাজার থেকে ক্রয় করতে হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এ বি এম মশিউল আলম জানান, আমি সম্প্রতি লাকসাম এসেছি। লাকসাম উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শনের এখনো আমার সুযোগ হয়নি। এরপরেও শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের লোকবল সংকট, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকট নিরসনসহ অবকাঠামো সমস্যা সমাধানে জরুরী ভিত্তিতে আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করবো।