কুমিল্লায় সড়ক-মহাসড়কে দেদার চলছে নিষিদ্ধ যানবাহন লেগুনা
ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লায় সড়ক-মহাসড়কে দেদার চলছে নিষিদ্ধ যানবাহন লেগুনা। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়সহ জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কসহ অধিকাংশ সড়কেই চলছে নিষিদ্ধ এ যানবাহনটি। এসব যানবাহন থেকে পুলিশ ও প্রশাসনের নামে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছে এক শ্রেণীর দালালচক্র।
বিশেষ করে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে এ ধরনের বিপুল পরিমাণ যানবাহন চলাচল করছে। ইতোপূর্বে জেলার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট, কোম্পানীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লেগুনার বড় ধরনের স্ট্যান্ড বসানো হয়েছে। এসব স্ট্যান্ডে পুলিশের নামে দেদার চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ দিকে কোনো প্রকার কাগজপত্র না থাকলেও রহস্যজনক কারণে এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, লেগুনা নামের চার চাকাবিশিষ্ট যানবাহনটি বের হওয়ার পর সড়ক মহাসড়কে দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটছে। বেপরোয়া এ যানবাহনটি ছোটখাটো দুর্ঘটনায় পড়লেও যাত্রীদের প্রাণহানি ঘটে বেশি। তাই সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এ যানবাহনটি চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সরকারি এ নির্দেশনার পর হাইওয়ে পুলিশ বিপুল সংখ্যক লেগুনা আটক করে ডাম্পিং করে। জেলার মিয়ার বাজার, ময়নামতি ও ইলিয়টগঞ্জ, দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশ শত শত লেগুনা আটকের পর ডাম্পিং করে। সম্প্রতি প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় দালালচক্র নিষিদ্ধ যানবাহনটি ফের সড়ক মহাসড়কে চালু করে। এতে জেলার বিভিন্নস্থানে সড়ক মহাসড়কে পুনরায় প্রানহানি শুরু হয়। এ নিয়ে ফের টনক নড়ে জেলা প্রশাসনে। গত ১৬ জুলাই জেলা সমন্বয় সভায় সড়ক মহাসড়কে নিষিদ্ধ লেগুনা বন্ধ করতে ও এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক আবুল ফজর মীর কঠোর নির্দেশনা দেন। কিন্তু জেলা প্রশাসকের এ নির্দেশনা বিন্দুমাত্র বাস্তবায়ন হয়নি মাঠ পর্যায়ে। পুলিশ-প্রশাসনের নামে চাঁদা নিয়ে দালাল সিন্ডিকেট জেলার সর্বত্রই চালাচ্ছে লেগুনা।
স্থানীয়রা জানায়, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে শত শত যানবাহন চলাফেরা করছে। এ দিকে সম্প্রতি কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ক্যান্টনমেন্ট, কংশনগর, দেবিদ্বার ও কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় বড় ধরনের লেগুনার স্ট্যান্ড স্থাপন করেছে এক শ্রেণীর চাঁদাবাজ চক্র।
লেগুনা চালক মোহন মিয়ান জানান, কোম্পানীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রতি লেগুনা থেকে ১শ’ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। স্থানীয় একটি চাঁদাবাজ চক্র পুলিশের নামে এ চাঁদা আদায় করছে বলে জানান ওই চালকসহ উপস্থিত আশপাশের কয়েকজন। তবে পুলিশের নামে চাঁদা আদায় করা হলেও এ টাকা পুলিশ পর্যন্ত পৌঁছায় না বলে জানিয়েছেন খোদ চালকরাই। যার ফলে প্রায়ই হয়রানির শিকার হতে হয় চালকদের।
হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ বলেন, সড়ক মহাসড়কে লেগুনা কিছুতেই চলতে দেয়া হবে না। এ যানবাহন দুর্ঘটনার কবলে পড়লে বিপুলসংখ্যক প্রাণহানি ঘটে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সড়ক মহাসড়কে লেগুনাসহ লো-স্পিডের এসব যানবাহন চলাচল বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউএনওদের নিয়মিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সূত্রঃ যুগান্তর