কুমিল্লা বুড়িচংয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১,আহত ১৫
মো. জাকির হোসেনঃ কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে গতকাল বুধবার দুপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোঃ ইব্রাহিম (৬০) নামে একজন নিহত হয়েছে। সংঘর্ষে নারী-পুরুষসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানায়, উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর উত্তর-পূর্ব পাড়ার মাউদগাজীর বাড়ীর মৃত আহসান উল্লাহর ছেলে ইব্রাহিম ও পার্শ্ববর্তী বাড়ীর মৃত আঃ হামিদের ছেলে অহিদ মিয়ার সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গতকাল বুধবার সকালে স্থানীয় বাজারের মধ্যে উভয় পক্ষের ছেলেদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। পরে অহিদ মিয়ার লোকজন লাঠি-সোটা নিয়ে ইব্রাহিমের বাড়ীতে গিয়ে গালমন্দ ও হুমকী ধমকী দিতে থাকে। পরে ইব্রাহিম ও তাঁর ছেলেরা বের হয়ে তাঁদের ধাওয়া করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। আধ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারী-পুরুষসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে অহিদ মিয়া ও তাঁর ছেলেরা ইব্রাহিম’কে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও দা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করে। সংঘর্ষ থেমে গেলে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ইব্রাহিমসহ গুরুতর আহতদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত ডাক্তার ইব্রাহিম’কে মৃত ঘোষনা করেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আহতরা হলো নিহত ইব্রাহিমের ছেলে ঢাকা ডি.এম.পি পুলিশে কর্মরত মোঃ এরশাদ (৩০), নিহত ইব্রাহিমের অপর ছেলে মোঃ শরীফ (২৫), মৃত আছমত আলীল ছেলে আইয়ূব আলী (৫৫), আইয়ূব আলীর তিন ছেলে আবু সাঈদ (২৪), আল-আমিন (৩০) ও মেহেদী হাসান (১৭), নিহত ইব্রাহিমের স্ত্রী অজুফা খাতুন (৬০), গোলাম আলীর স্ত্রী মোর্শেদা বেগম (৫৬), মৃত আঃ হামিদের ছেলে অহিদ মিয়া (৬৫), অহিদ মিয়ার ছেলে সুরুজ মিয়া (৪০), রবিউল আলম (২৮), ফিরোজ মিয়ার ছেলে মোশারফ, ফজলুল হকের ছেলে শাহজাহান।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ আকুল কুমার বিশ্বাস, এস আই রাজিব করসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বিকেলে কুমিল্লা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তানভীর সালেহীন ইমনসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ অহিদ মিয়ার স্ত্রী’কে বাড়ী থেকে আটক করে ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অহিদ মিয়ার ছেলে সুরুজ, রবিউল ও ফিরুজ মিয়ার ছেলে মোশারফ’কে পুলিশ হেফাজতে নেয়। আহতদের মধ্যে ৮ জন বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অহিদ মিয়া’কে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।