কুমিল্লা বিভাগে থাকছে না বৃহত্তর নোয়াখালী
ডেস্ক রিপোর্টঃ বিভাগের দাবি বাস্তবায়নের স্বপ্ন এখন কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর দোরগোড়ায়। নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুরকে বাদ রেখে কুমিল্লা নামেই বিভাগ হচ্ছে। আর এমন ইঙ্গিতই মিলেছে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপির কথায়। বিভাগ নিয়ে দীর্ঘদিনের দাবি আর গঠনমূলক আন্দোলনের সফল বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে এমন খবরে আবারো খুশিতে মেতে ওঠেছে বৃহত্তর কুমিল্লাবাসী।
কুমিল্লা বিভাগ করার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল সেই অনেক বছর আগে। প্রায় ৪০ বছর পর ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে কুমিল্লার সদর আসনে আকম বাহাউদ্দিন বাহার আওয়ামী লীগের এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর মহান জাতীয় সংসদে কুমিল্লাকে বিভাগ করার যোক্তিকতাসহ কুমিল্লার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রথম তুলে ধরেন। জাতীয় সংসদের একাধিক অধিবেশনে কুমিল্লাকে বিভাগ করার দাবি তুলে বক্তব্য রেখেছেন এমপি হাজী বাহার। আর বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লাবাসী শান্তির নি:শ্বাস ফেলেছিল ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি। ওইদিন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম বিভাগকে ভেঙে কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর জেলা নিয়ে কুমিল্লা বিভাগ করার ব্যাপারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে নির্দেশনা দেন। এরকম নির্দেশনা শুনে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বৃহত্তর কুমিল্লাবাসী কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আবার ওই বছরের ৪ মার্চ মহান জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুমিল্লাকে বিভাগ করার ঘোষণা দেন। কুমিল্লা নামে বিভাগ নিয়ে যখন প্রক্রিয়া শেষের দিকে এগুচ্ছিল তখন একনেকের সভায় কুমিল্লা নামের পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত আসলে বৃহত্তর কুমিল্লাবাসী রাজপথে আন্দোলনে নামে। এমনিভাবে বিভাগ বাস্তবায়নের বিষয়টি বিলম্বিত হতে থাকে।
এছাড়াও বৃহত্তর কুমিল্লার সাথে বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর থাকা না থাকা নিয়ে টানাপোড়েন দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত বৃহত্তর নোয়াখালী বৃহত্তর কুমিল্লার সাথে থাকছেনা এমন আভাসই দিলেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন শেষে আইনমন্ত্রী কুমিল্লা বিভাগ প্রসঙ্গে জানান, কুমিল্লা নামেই বিভাগ হচ্ছে। যাদের সঙ্গে নিতে চেয়েছিলাম তারা আসবে না। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং চাঁদপুর থাকছে কুমিল্লার সঙ্গে। কুমিল্লা বিভাগ হওয়ার সিদ্ধান্ত এবং সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে। এখন ঘোষণার অপেক্ষায়।
জানতে চাইলে কুমিল্লা সদরের এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ওপর মানুষের চাপ কমানোর বিষয়টির প্রতি ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েই প্রধানমন্ত্রী কুমিল্লা বিভাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে বলবো, বিভাগ বাস্তবায়নে অনেকটা সময় পার হয়েছে ঠিকই। তবে সবুরের ফল অনেক ভালো হয়, এমন প্রত্যাশায় আমরাও আশাবাদি প্রধানমন্ত্রী সহসাই কুমিল্লা বিভাগের ঘোষণা দিবেন।
সূত্রঃ ইনকিলাব