কুমিল্লা-১০ আসনে বিএনপি’র মনোনয়নপত্র জমা দিলেন শাহাবুদ্দীন আহমদ ফারুক
ফারুক আল শারাহঃ ১৬ নভেম্বর শুক্রবার নাঙ্গলকোটের বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দীন আহমদ ফারুক। তিনি কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট-সদর দক্ষিণ-লালমাই) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী। রাজনীতিতে ত্যাগ বিবেচনায় তিনি মনোনয়ন পাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।
কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট-সদর দক্ষিণ-লালমাই) আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহাবুদ্দীন আহমদ ফারুক বলেন- বাংলাদেশে আজ গণতন্ত্র ভুলুন্ঠিত। প্রতিহিংসার বিচারে গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। মিথ্যা ও সাজানো মামলায় তারেক রহমান এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে দেশে আসার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দেশের গণতন্ত্র, উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সুশাসনে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিএনপি’র সুনাম রয়েছে। অথচ এ দলের চেয়ারপার্সন আজ সরকারে নোংরা রাজনীতির শিকার হয়ে কারাগারে দিনাতিপাত করছেন। শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ বেগম জিয়াকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়ার ক্ষেত্রেও সরকার বিমাতাসুলভ আচরণ করছে।
তিনি বলেন- বিএনপি দক্ষিণ এশিয়ার একটি সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। এ দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক করে বর্তমান অবৈধ সরকার ৫ জানুয়ারির মতো একতরফা আরেকটি নির্বাচনের স্বপ্ন দেখছে। দেশবাসী সরকারের এ ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে এ দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করবে ইনশা-আল্লাহ।
শাহাবুদ্দীন আহমদ ফারুক বলেন- আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। রাজপথে দুর্বার আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে বিএনপি দেশবাসীর ন্যায্য অধিকার আদায় করবে।
তিনি বলেন- আমি ১৬ নভেম্বর কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট-সদর দক্ষিণ-লালমাই) আসনে বিএনপি’র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বিগতদিনে আমার রাজনৈতিক ত্যাগ বিবেচনায় দল আমাকে যোগ্য মনে করলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আমি প্রস্তুত আছি।
শাহাবুদ্দীন আহমদ ফারুক বলেন- বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এ দলের নেতৃত্ব এবং মনোনয়ন লাভের জন্য প্রতিযোগিতা-প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে- এটাই স্বাভাবিক। কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট-সদর দক্ষিণ-লালমাই) আসনেও নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা-প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। দ্বন্দ্ব-গ্রুপিং যাই থাকুক না কেন আসন্ন নির্বাচনে দল যাকে মনোনয়ন দেবে সকলে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করবে বলে আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন- রাজনীতিতে ব্যক্তি বিশেষের দ্বন্দ্ব-গ্রুপিং থাকতেই পারে। কিন্তু দেশনেত্রীকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করতে, হারানো আসন পুনরূদ্ধার এবং ধানের শীষ প্রতীকের সম্মান রক্ষার্থে সকলকে একই প্লাটফরমে এসে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।
শাহাবুদ্দীন আহমদ ফারুক বলেন- বিগত ১০ বছরে সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট-সদর দক্ষিণ-লালমাই) আসনে উন্নয়নের নামে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন, বিদ্যুৎ উদ্বোধনের নামে মানুষের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। নাগরিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের নামে জনগণের ভোট পেতে শপথ আদায়ের চেষ্টা করা হয়েছে। কুমিল্লা-১০ আসনের জনগণ চলমান জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেতে চান। এ জন্য আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থীকে বিজয়ী করা সময়ের অপরিহার্য দাবিতে পরিণত হয়েছে।
শাহাবুদ্দীন আহমদ ফারুক বলেন- বর্তমানে দেশের ক্রান্তিকাল চলছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর শেয়ার বাজার, পদ্মা সেতু ও হলমার্ক দুর্ণীতি, বিডিআর পিলখানা হত্যাকা-সহ সারাদেশে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর নির্যাতন, নিপীড়ন সর্বকালের রেকর্ড অতিক্রম করেছে। চলমান সংকট উত্তোরণের জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের বিকল্প নেই। এ দেশের জনগণ আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি’র পক্ষে ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে সরকারের স্বৈরাচারী আচরণের জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
শাহাবুদ্দীন আহমদ ফারুক নাঙ্গলকোটের জোড্ডা ইউনিয়নের ঘোড়াময়দান গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম মৃত আলহাজ্ব এম. নজির আহমদ মিয়া।
শাহাবুদ্দীন আহমদ ফারুক ছাত্রজীবনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯ দফা কর্মসূচির প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়ে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ছাত্রাবস্থায় ছাত্রদলের রাজনীতিকে গতিশীল করতে তিনি তিনি সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাষ্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যলনকালীন তিনি মহসিন হলে অবস্থান করে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
শাহাবুদ্দীন আহমদ ফারুক সামাজিক-স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন। তিনি নাঙ্গলকোট মর্ডান ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। তিনি দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা সহায়তা, শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ এর নির্মাণ কাজে সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছেন। তিনি দরিদ্র মেয়ের বিবাহ, চিকিৎসা বঞ্চিত মানুষদের সহযোগিতা করে মানবিক সেবায় ভূমিকা রাখছেন। তিনি সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী ও জনকল্যাণমুলক বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত থেকে দেশ ও মানবতার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া শিক্ষিত বেকার যুব সম্প্রদায়কে তিনি সাহায্য-সহযোগিতা করে কর্মমুখী জনগোষ্ঠী হিসেবে গড়ে তুলতে নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তিনি মানবিক সেবায় ভূমিকা রেখে চলেছেন।
শাহাবুদ্দীন আহমদ ফারুক দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সম্মুখভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলায় সাংগঠনিক সফরে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতিকে সুশৃঙ্খল ও গতিশীল করতে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছেন। তিনি কুমিল্লা জেলা দক্ষিণ বিএনপি’র সম্মানিত সদস্য হিসেবেও বিএনপি’র রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। নাঙ্গলকোটের বিএনপি’র রাজনীতিতে তিনি নিবেদিত প্রাণ। তিনি সুখে-দুঃখে দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়ান। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশে গিয়ে তিনি দলকে গতিশীল করতে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। বিগতদিনে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্বে দেয়ায় তাকে বিভিন্ন হয়রানিমুলক মামলায় আসামী করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শাহাবুদ্দীন আহমদ ফারুক বলেন- স্বাধীনতা-সংগ্রম ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের জনপদ হিসেবে খ্যাত কুমিল্লা-১০ আসনটি একদিকে সামগ্রিক উন্নয়নে পিছিয়ে, অন্যদিকে এখানকার মানুষ ন্যায় বিচার বঞ্চিত। আমি প্রিয় এলাকাবাসীর ভালোবাসায় কখনো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে সমাজের সকল স্তরে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবো।
যুব সমাজকে সম্পদে পরিণত করতে মাদকের বিক্রি ও সেবন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির ও দুর্ণীতির বিরুদ্ধে জনসচেুনামুলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। উপজেলা সদর থেকে শুরু করে পল্লী এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতের মাধ্যমে শতভাগ শিক্ষার হার উন্নীত করবো। সুচিকিৎসার পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। ঢাকা, চট্টগ্রামে সরাসরি যাতায়াতের লক্ষ্যে ফোরলেন সড়ক নির্মাণ এবং উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা চালু করবো। বিত্তশালীদের পুঁজি ও মেধাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী এলাকায় শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলে বেকার তরুণ-তরুণীদের চাকুরির ব্যবস্থা করা হবে। নাঙ্গলকোটে গ্যাস সংযোগ চালুর মাধ্যমে পরিকল্পিত, নিরাপদ ও বাসযোগ্য আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। নির্বাচনী এলাকায় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে উজ্জ্বীবিত করে হবে। সর্বোপরি নাঙ্গলকোটকে জেলা বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করলে শাসক নয় জনগণের সেবক হিসেবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাব। আমি প্রিয় নির্বাচনী এলাকার সর্বস্তরের জনগণের আন্তরিক সমর্থন, সহযোগিতা ও দোয়া প্রত্যাশী।