কুমিল্লায় বাগান প্রেমীদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত
আলাউদ্দিন আজাদঃ “সবুজে থাকুন,সবুজে বাচুঁন” এই স্লোগানকে সামনে রেখে কুমিল্লায় উদ্ভিদ প্রেমীদের মিলনমেলা ও একটি বড় প্লাটর্ফম তৈরি করেছে কুমিল্লা গার্ডেনার’স সোসাইটি নামে সোসাল মিডিয়া পেজবুকের একটি গ্রুপ।কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের প্রভাষক ডাঃ মোঃ আবু নাঈমের হাত ধরে ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বের যাত্রা শুরু করে গ্রুপটি বর্তমানে পাঁচহাজার সদস্য রয়েছে।এই গ্রুপটির লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে এ্যাডমিন ডাঃ আবু নাইম বলেন যারা মুলত বাগান করেন সবুজকে ভালোবাসে প্রকৃতি প্রেমীদের একটি প্লাটফর্ম নিয়ে এসে সবুজের সমারোহ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এটির যাত্রা শুরু করি।আমরা বিশ্বাস করি সমষ্টিগতভাবে যেকোন কাজকে সামনে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।দেখা যায় আমাদের এখানে যারা বড় বাগানী রয়েছে তাদের বাগানে প্রায় ২শত প্রজাতির ফুল,ফল এবং ঔষদি উদ্ভিদ রয়েছে।যারা নতুনভাবে বাগান শুরু করবে তাদের একসাথে এতগুলো প্রজাতি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়না।আমরা জানি ক্ষেত্রভেদে উদ্ভিদের বীজ,শাখা-প্রশাখার, কলমের মাধ্যমে পূনরায় উদ্ভিদ জন্মায়। প্রুপের সদস্যরা যার যার কাছে যে প্রজাতির গাছ রয়েছে এগুলো অন্যদের মাঝে সেয়ার করে সমারোহ বাড়ানো যায়। এজন্যেই গ্রুপে গিপ্ট পোস্ট চালু আছে যার কাছে যে প্রজাতি গাছ রয়েছে সেগুলো কতজনকে দিতে পারবে এই নিয়ে পোস্ট করা হয়।এখানে সেচ্ছায় বিনামূল্যে সবাইকে গাছের চারা দিয়ে থাকে। আমরা প্রতি ২-৩ মাস পরপর ইভেন্ট করি যেখানে উদ্ভিদ গুলো বিতরণ হয়।তাছাড়া উৎসাহ প্রদানের লক্ষে যারা নতুন বাগান করে তাদের ও সেরা বাগানীদের পুরস্কৃত করি।
গ্রুপের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে গ্রুপে মডারেটরেরর দ্বায়িত্বপালন করছেন সরকারি মহিলা কলেজের প্রাণি বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাওহিদা আক্তার,ডাঃ তাহিয়া শারমিন স্বর্না,শারমিন আক্তার,কামরুন নাহার মিমি,সাব্বির বিন আশরাফ।১৬ নভেম্বর শুত্রবার প্রুপটির দ্বিতীয় বর্ষ পূর্তি কুমিল্লা টাউন হলের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানে শুরুতে ডাঃ তালেহা চৌধুরী,দিল আনার ছবি,ফারজানা সুমি,মাসুমা ভুইঁয়া কে সেরা বাগানী হিসেবে এবং পাচঁ জনকে নতুন বাগানী হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়।পরর্বতীতে ১৬ টি গিপ্ট পোস্টের ৪০ প্রজাতির ফুলের চারা,বীজ ও সবজি বীজ উপস্থিত ১২৫ জন সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রজাতি সোর্ডলিলি,সাদা টগর,মরিচা জবা,বিভিন্ন প্রজাতির ক্যাকটাস, কাঁটা মুকুট,হাজারী লাউয়ের বীজ,মর্নিং গ্রোরি,অপরাজিতা সহ হরেক রকম প্রজাতি।
সেরা বাগানী পুরস্কার প্রাপ্ত কুমিল্লা সেন্ট্রাল মেডিক্যাল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ তালেহা চৌধুরী বলেন মাধ্যমিকের শুরু থেকে আমি বাগান করি।আমার ভালো লাগা থেকেই আমি বাগান করি।বর্তমানে আমার বাগানে তিনশতের মতো প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে।লিলি আমার প্রিয় ফুল রংয়ের বৈচিত্র্যে আমাকে মুগ্ধ করে। নতুন বাগানীদের ক্ষেত্রে তার পরামর্শ গাছকে ভালোবাসুন,গাছকে ভালোবাসুন।
একই কলেজের সহকারি অধ্যাপক ডাঃ ফরহাদ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন আমি সবুজ প্রকৃতি ভালোবাসি তাই ছোটকাল থেকেই বাগান করি।আমার পরিবার ও বাগান করে আমি উৎসাহ যোগাই সহযোগিতা করি।আমার প্রিয় গোলাপ, গোলাপের সুবাস বৈচিত্র্যময় রুপ সত্যিই মুগ্ধ করে।যারা নতুন বাগান করবে তাদের বলবো প্রতিদিনই বাগানে কিছু সময় দিতে হবে।
ডাঃ তাহিয়া শারমিন স্বর্ণা বলেন এই গ্রুপে যুক্ত হওয়ার পরেই আমি বাগান করা শুরু করি,বর্তমানে আমার সংগ্রহে ৭০ টি প্রজাতি রয়েছে,রজনীগন্ধা আমার প্রিয়, কারণ সাদা রং আমি ভালোবাসি।সুযোগ পেলে কানাডা থেকে চেরি ফুলের চারা সংগ্রহ করবো।প্রতিবন্ধকতা কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন বৃক্ষ জাতীয় ফুল ছাতিম,মহুয়া, হিজল এগুলো জায়গার সল্পতার লাগাতে পারিনা।নতুন বাগান করার ক্ষেত্রে আমি বলবো আশেপাশের সহজলভ্য উদ্ভিদ দিয়ে শুরু করুন আস্তে আস্তে সংখ্যা বাড়ান।
শারমিন আক্তার বলেন বাসার ছাঁদে বাগান করি ২০১৪ সাল থেকে।গ্রুপে এড হওয়ার পরে ভালোভাবে শুরু করি।বাগান করতে গিয়ে অনেক বকা শুনতে হয় তখন একটু খারাপ লাগে।কাঁটা মুকুট আমার ভালো লাগে রং পরিবর্তন করে পুরো বছর থাকে।
কামরুন নাহার মিমি প্রাইমারি থেকেই বাগান করা আমার সখ।আমার দাদা ভাই আমাকে উৎসাহ দিতো গ্রুপে যুক্ত হয়ে সেটি আরো বৃদ্ধিপেল।লাল গোলাপ আমার প্রিয়।যারা নতুন বাগান করবে আমি বলবো পছন্দের গাছ দিয়ে শুরু করবে।ফল সবজি গাছ রাগাবেন।
সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মিলি মুন্সি জানান বাগান করা আমার সখ কিন্তু বাগান করতে গিয়ে অনেক বকা শুনতে হয়। বকাটা আমার জন্যে উৎসাহ হিসেবে কাজ করে।সুরড প্যান্ট আমার প্রিয় যেটি টবে ভালো হয়।