সব বাঁধা পেরিয়ে এইচএসসিতে সেই প্রতিবন্ধী আরিফের সাফল্য
আকবর হোসেনঃ সব বাঁধা পেরিয়ে এসএসসি পরীক্ষার মতো এইচএসসি পরীক্ষায়ও সেই প্রতিবন্ধী আরিফ হোসেন সাফল্য অর্জন করেছে। তার দুটি পা নেই তবুও সে পড়ালেখা চালিয়ে এসেছে। ২০১৭ সালে যখন সে এসএসসি পরীক্ষা পাস করেছে তখন দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ ও দৈনিক রূপসী বাংলাসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল ও পত্র-পত্রিকায় তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাকে কলেজে ভর্তি করার দায়িত্ব নেন প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার প্রতিনিধি ও প গ্রাম স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক সাংবাদিক মোঃ আকবর হোসেন। চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সে পাশ করেছে। কোন বাঁধাই তাকে রুখতে পারেনি।
জানা যায়, মনোহরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রতিবন্ধী আরিফ। সে ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ছাত্র। সে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৩.২৫ অর্জন করেছে। এর আগে ২০১৭ সালে মনোহরগঞ্জ উপজেলার মৈশাতুয়া ইউনিয়নের আশিরপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র মোঃ আরিফ হোসেন মনোহরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। সে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৩.০০ অর্জন করেছে। সে পাশ্ববর্তী লাকসাম উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের গাজীরপাড় গ্রামের দিনমজুর কাজী আবুল বাশারের ছেলে। না খেয়ে অনেক কষ্ট করে দিনমজুর আবুল বাশার তার ছেলের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে এসেছে।
মনোহরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আবদুল মতিন জানান, মানুষের ইচ্ছা শক্তি থাকলে কোন প্রতিবন্ধকতা তার উন্নতির শিখরে উঠতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় না। আরিফ হলো এর জলন্ত প্রমাণ। অত্যান্ত গরীব পরিবারের সন্তান প্রতিবন্ধী আরিফ। কলেজে থাকাকালীন আমরা তাকে অনেক সহযোগিতা করেছি। আমি আরিফের মতো প্রতিবন্ধীসহ সকল প্রতিবন্ধীদের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি। প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাপী কাজ করে যাচ্ছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। আরিফের সাফল্যে তার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। এছাড়াও শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে মাননীয় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এমপি’র অব্যাহত সহযোগিতা ও সাফল্য কামনা করছি।
এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রতিবন্ধী অফিসার তাকে অনেক সহযোগিতা করেছে। প্রতিবন্ধী আরিফ জানান, আমার দুটি পা নেই। চলাফেরা করতে আমার অনেক কষ্ট হয়। আমি লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চাই। সমাজের বিত্তবানদের কাছে আমি সহযোগিতা চাই। এছাড়াও সে সকলের নিকট দোয়া কামনা করেছে।