কুমিল্লায় কুকুরের কামড়ে অর্ধশতাধিক মানুষ আহত
ডেস্ক রির্পোট: কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় পাগলা কুকুর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ।
দেবিদ্বার পৌর এলাকার ছোট আলমপুর, বানিয়াপাড়া, বারেরা, চাঁপানগর, হামলাবাড়ি এবং উপজেলার খলিলপুর, লক্ষ্মীপুর, বাঙ্গরা, জাফরগঞ্জ, চরবাকর, জয়পুর, রাজামেহার, নবীয়াবাদ, আবদুল্লাহপুর এলাকায় গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পাগলা কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছে অতন্ত ২০ জন।
এ ছাড়াও গত এক সপ্তাহে ওই এলাকাগুলোতে আরও ৩০ জনসহ প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষকে কুকুরে কামড়ানোর খবর পাওয়া গেছে। এতে নারী ও শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত ব্যক্তিরা হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেছেন। তবে উপজেলা পর্যায়ে জলাতঙ্ক ও প্রতিষেধক ভ্যাকসিন না থাকায় গরিব রোগীরা পড়েছে বিপাকে। তারা এ সব ভ্যাকসিন বেশি দামে ক্রয় করতে হচ্ছে স্থানীয় বাজারের ফার্মেসি থেকে।
শুক্রবার সকালে হাসপাতালে ছেলের চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের লাভলী আক্তার নামে এক নারী জানান,পাগলা কুকুর তার ছেলেসহ দুইজনকে কামড়ায়, এলাকাবাসী কুকুটিকে ধাওয়া করলে পাশের গ্রাম খলিলপুরে গিয়ে আরও দুইজনকে কামড় দেয়।
ছোট আলমপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন জানান, কুকুরের কামড়ে তার কিছু মাংস উঠে গেছে। এখন তার পক্ষে স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করা সম্ভব হচ্ছে না।
জাফরগঞ্জ গ্রামের সাজ্জাত হোসেন বলেন, কুকুরটি হঠাৎ করে এসে আমার পায়েই কামড় বসিয়ে দেয়।
বারুর গ্রামের ইকবাল হোসেন নামের এক ভুক্তভুগির পিতা জানান, আমার ৭ বছরের মেয়ে বাড়ির উঠানে হাঁটছিল। একটি কুকুর পেছন থেকে এসে আমার মেয়ের পায়ে কামড় দেয়। কামড়ের ফলে তার পায়ে অনেকটা ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক এক ব্যাক্তি জানান, পাগলা কুকুর আতঙ্ক এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে, আমরা আমাদের বাচ্চাদের ঘরে বাহিরে পাঠাতে পারছি না, স্কুলে পাঠাতেও ভয় পাচ্ছি। প্রশাসনের পক্ষথেকে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পাগলা কুকুরের কামড়ে আরও অনেকে আক্রান্ত হতে পারে। উপজেলা হাসপাতালে ভ্যাকসিন না থাকায় চড়াও মূল্যে ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন ক্রয় করতে হচ্ছে।
দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহম্মেদ কবির জানান, ‘কুকুরের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই হাসপাতালে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে গেছে। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ও কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতালে জলাতঙ্কের পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন রয়েছে। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন না থাকায় রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন ক্রয় করছে। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, কুকুরে কামড়ালে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভ্যাকসিন দিতে হবে।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক রবীন্দ্র চাকমা যুগান্তরকে জানান, বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে আমাদের কাছে এ বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ এসেছে। যেহেতেু এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয়, তাই কুকুরগুলোকে আমরা মারবো না। তবে এদের নিবৃত্ত করার জন্য ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেব। এ বিষয়ে আমরা একটি সভাও আহ্বান করেছি।