কুমিল্লায় গরিবের ১ হাজার ৭৮ কেজি চাল আ. লীগ নেতার গোডাউনে
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ১০ টাকা কেজি দরের সরকারি চালের বস্তা নিজের গোডাউনে রেখে বিক্রির অভিযোগে উঠেছে শ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সামাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে তাকেসহ দুজনকে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আবদুস সামাদ স্থানীয় ইউপি মেম্বার এবং ১০ টাকা কেজি দরের চালের ডিলার।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন সরকার অভিযান পরিচালনা করে এই জরিমানা করেন।
অভিযানের পর জানা যায়, সুলভ মূল্যে বিক্রি হওয়া ৫৪৮ কেজি চাল মুদি দোকানের গোডাউনে রেখে বিক্রি এবং ৫৩০ কেজি চাল ভূষির গোডাউনে সরিয়ে রাখার অভিযোগে উপজেলর শ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ডিলার আবদুস সামাদ মেম্বারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অপরদিকে, মেম্বারকে সহযোগিতা করায় মনির হোসেন নামে এক দোকানিকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন সরকার বলেন, ‘১০ টাকা কেজি দরের চালের কার্ডধারী গরিব ও দরিদ্রদের মাঝে বিক্রি না করে ভূষির গোডাউন ও মুদি দোকানের গোডাউনে রেখে বিক্রি হচ্ছে—এমন খবর পাই। পরে শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর বাজারের ডিলার ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সামাদ মেম্বারের গোডাউন এবং আরেকজন মুদি দোকানির গোডাউনে অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুই গোডাউন থেকে ৫, ১০ ও ১৫ কেজি করে পলিথিনের প্যাকেটে রাখা অবস্থায় ১ হাজার ৭৮ কেজি চাল জব্দ করা হয়।’
উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে আবদুস সামাদ মেম্বারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং সরকারি চাল রাখার দায়ে মুদি দোকানিকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযোগ স্বীকার করে আবদুস সামাদ বলেন, ‘সরকারি চাল প্যাকেটজাত করাই ছিল আমার অপরাধ। খাদ্য অধিদফতর থেকে আসা চাল আমি এলাকার সব কার্ডধারী গরিব ও অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করেছি। কিছু চাল গোডাউনে রেখেছি করোনা দুর্যোগে খাদ্য সংকটে পড়া অসহায় ও হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করার জন্য। ভ্রাম্যমাণ আদালত সে কারণে আমাকে এবং মুদি দোকানের গোডাউনের মালিককে জরিমানা করেছে।’
আল আমিন সরকার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করছে। কিন্তু কতিপয় ডিলার করোনা সংকটের সুযোগ নিয়ে গরিবের চাল প্যাকেটজাত করে বিক্রি করছে। এজন্য আমরা তাদের জরিমানা করেছি। চৌদ্দগ্রামে এ ধরনের আর কোনও অভিযোগ পাওয়া গেলে অর্থ ও কারাদণ্ড দুটোই প্রদান করা হবে।’
সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন