করোনা সংক্রমণ এড়াতে কাজ করছে কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশ
জাতীয় প্রধান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিরাট একটি অংশজুড়ে রয়েছে কুমিল্লা জেলা। দেশের আমদানী-রপ্তানীর সিংহভাগ চট্টগ্রাম বন্দও হয়ে ঢাকাসহ সারাদেশে পণ্যসামগ্রী পরিবহনেও এই মহাসড়ক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। ফলে এমনিতেই যাত্রীপরিবহনের পাশাপাশি মালামাল পরিবহনে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করছে এই মহাসড়কে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী,লক্ষèীপুর,চাঁদপুর জেলার লোকজনও এই পথে যানবাহন নিয়ে চলাচল করে। সাম্প্রতিক সময়ে করোনা প্রভাব বেড়ে গেলে কিছুদিন গণপরিবহন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি আবারো যানবাহন চলাচল শুরু হলে করোনার প্রভাব নিয়ন্ত্রণে দেশের প্রধান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও কুমিল্লা-নোয়াখালী মহাসড়কে কুমিল্লায় করোনা সংক্রমণ রোধে কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশ। এঅবস্থায় গণপরিবহনে শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা ও সংক্রমণরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে চলাচল পর্যবেক্ষণ করছে পুলিশ। পুলিশের এই তৎপরতা করোনা সংক্রমনের যে ঝুঁকি তা অনেকাংশেই কমে আসবে বলে মনে করেন যাত্রী ও চালকরা।
করোনাকালীন সময়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও কুমিল্লা-নোয়াখালী মহাসড়কে প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার যানবাহন চলাচল করছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই যাত্রীবাহী গণপরিবহন। রাজধানী ঢাকার সাথে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলার যোগাযোগ কুমিল্লা জেলার উপর দিয়েই। তাই মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে গণপরিবহনে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি প্রতিরোধে পুলিশী পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা জোরদার করেছে হাইওয়ে পুলিশ। বাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে যাত্রী ও চালকরা যথাযথভাবে মাস্ক ও জীবানুনাশক ব্যবহার করছে কি না সে বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করছে হাইওয়ে পুলিশ। এছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন মোড়ে বাস কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা ও পরিবহনে জীবাননুনাশক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছে পুলিশ। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার পদুয়ার বাজার, ময়নামতি সেনানিবাস এলাকা, ইলিয়টগঞ্জ, দাউদকান্দি, মিয়াবাজার এলাকার বিভিন্ন চেকপোস্টে পুলিশ গণপরিবহনে এই ধরনের পর্যবেক্ষণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
শনিবার কুমিল্লা পদুয়ারবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, লালমাই হাইওয়ে ক্রসিং ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন পরিবহনে লিফলেট বিতরণ করছে। যেসব পরিবহনের যাত্রী ও চালকরা মাস্ক ব্যবহার করছে না তাদেরকে মাস্ক ব্যবহার করতে পরামর্শ দিচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন বাস কাউন্টারে যাত্রীদের শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা ও পরিবহনে জীবানুনাশক ব্যবহারে সতর্কতামূলক পরামর্শ দেন তারা।
কুমিল্লা পদুয়ার বাজার এলাকায় ঢাকাগামী যাত্রী দেলোয়ার জানান, পুলিশী উপস্থিতির কারনে গণপরিবহনে এই ধরনের নিরাপত্তা আরো জোরদার হবে। যারা মাস্ক ও সেনিটাইজার ব্যবহার করতে ইচ্ছুক না তারা বাধ্য হয়েই এগুলো ব্যবহার করবে। এছাড়া বিভিন্ন পবিহনে যদি শারীরিক দূরত্ব না মেনে যাত্রী পরিবহন করতে চায় তাহলে সেগুলো বন্ধ হবে।
কুমিল্লা থেকে নোয়াখালীগামী বাসযাত্রী নিখিল দাশ জানান, পুলিশের ভয়েও অনেক বাসযাত্রীরা মাস্ক পরছে। এছাড়া বাসভাড়া অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে না। এই ধরনের তৎপরতা প্রতিদিন থাকা উচিত।
কুমিল্লা লালমাই হাইওয়ে ক্রসিং ফাঁড়ির ইনচার্জ জিয়াউল চৌধুরী টিপু জানান, হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের বিভিন্ন জায়গায় হাইওয়ে পুলিশ তাদের করোনাকালীন সময়ের দায়িত্ব পালন করছে। আমরা চেষ্টা করছি করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে। গণপরিবহনসহ বিভিন্ন পরিবহনের চালক ও যাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক তথ্য দেয়ার চেষ্টা করছি। তারা যেন এই সময়ে নিজেদের নিরাপত্তা নিজেরা জোরদার করতে পারে সেগুলো আমরা লক্ষ্য করছি। এছাড়াও কোথাও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোন অভিযোগ থাকলে আমরা সেসব অভিযোগ সুরাহা করছি। যতদিন আমাদের উপর এই ধরনের দায়িত্ব থাকবে হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়ন আমরা চেষ্টা করবো এই ধরনের নিয়মিত দায়িত্ব পালনের জন্য।
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, নিয়মিত দায়িত্বের পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করে সচেতনতা সৃষ্টি করা কাজ করছে। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মহাসড়কের বিভিন্ন স্পটগুলোতে কাজ করছে। যতদিন এই ধরনের বিশেষ দায়িত্ব থাকবে হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সদস্যরা সড়কে ও গণপরিবহনে সাধারণ মানুষের ঝুঁকি নিরসনে কাজ করবে।