কুমিল্লার টাউন হলে নির্মিত হবে আধুনিক মিলনায়তন
দেলোয়ার হোসেন জাকিরঃ কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী টাউন হলে নির্মিত হবে আধুনিক মিলনায়তন। শত বছর প্রাচীন এই মিলনায়তনে থাকবে উচ্চ প্রযুক্তির সকল ব্যবস্থা।
কুমিল্লা সদর আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার রবিবার দুপুরে সার্ভে টিম টাউন হলে আসলে আধুনিক টাউন হল নির্মানে দিকনির্দেশনা দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত ও টাউন হলের সাধারণ সম্পাদক আবিদুর রহমান জাহাঙ্গীর।
কুমিল্লা টাউনহলের ইতিহাস
ইতিহাসখ্যাত কুমিল্লা শহরের এখনকার সময়ের প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়। কুমিল্লার কান্দিরপাড়ের টাউন হল নামে সমধিক পরিচিত যে স্থানটি তার আক্ষরিক নাম বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন, কুমিল্লা।
শতাব্দীরও বেশি সময় আগে প্রতিষ্ঠিত এই পাঠাগারটি জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালিয়ে চলছে নিরবধি। এই শতাব্দী অতিক্রান্ত গণপাঠাগারটি প্রতিষ্ঠার পেছনে রয়েছে সমুজ্জ্বল ও বিশদ ইতিহাস। তৎকালীন ত্রিপুরার মহারাজার জমিদারি ছিল কুমিল্লাতে।
এই বীরচন্দ্র গণপাঠাগারটিতে তখন মহারাজার কাছারি বাড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। মহারাজার নায়েব-গোমস্তারা এই কাছারি বাড়িতে থাকত। ত্রিপুরার মহারাজ দানবীর শ্রী বীরচন্দ্র মানিক্য বাহাদুরের মহানুভবতায় কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্রে ১০ বিঘা ৫ কাঠা ১৪ ছটাক ভূমি প্রদান করেন বার্ষিক মাত্র এক আনা খাজনায়।
১৮৮৫ সালের ৬ মে তৎকালীন ত্রিপুরা, বর্তমান কুমিল্লার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মি. এফএইচ স্ক্রাইনের উদ্যোগ এবং তার সৃজনশীল প্রয়াসে ত্রিপুরার মহারাজ পাঠাগারের জন্য এই ভূমি বরাদ্দ করে দেন। তাই মহারাজের নাম অনুযায়ী পাঠাগারটির নামকরণ করা হয়। তৎপরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তির আর্থিক ও মানসিক সহযোগিতায় তিল তিল করে সমৃদ্ধতা অর্জন করেছে এই পাঠাগারটি।
কুমিল্লার সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে বীরচন্দ্র গণপাঠাগার তথা টাউন হল এক অত্যুজ্জ্বল নাম। এক সময়ে এই পাঠাগারের সামনে শহীদ মিনার গড়ে উঠেছে। শহীদ মিনারের পাশে মুক্তমঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। একটি মিলনায়তনও রয়েছে, যা নগর মিলনায়তন নামে পরিচিত।
দ্বিতলবিশিষ্ট ভবনের মূল ফটকের ফ্লোরে সারি সারি টেবিলের উপর দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকাগুলো সাজানো রয়েছে। পাঠকের জন্য পত্রিকা পাঠের সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ভবনের সিঁড়ি বেয়ে দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে তাকে তাকে সাজানো রয়েছে প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রকাশিত সৃজনশীল গবেষণালব্ধ অজস্র বই। এই পাঠাগারটিতে পাঠকের বসে বই পড়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। শুধু সদস্যরাই বই বাড়িতে নিয়ে পড়তে পারবে। তবে গবেষণার জন্য পাঠাগারের আলাদা কক্ষে বই পড়ার সুব্যবস্থা রয়েছে।