কুমিল্লায় ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের ‘বঙ্গবন্ধু তরণী মঞ্চ’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্স মাঠে নির্মিত হয়েছে একশ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের নৌকা ‘বঙ্গবন্ধু তরণী মঞ্চ’। এতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। এক কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন এ স্থাপনাটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারাও।
জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা পুলিশ লাইন্স প্যারেড মাঠে মুজিববর্ষ উপলক্ষে গত মার্চে শুরু হয় নৌকার মধ্যে স্থায়ী মঞ্চের নির্মাণকাজ। ইতোমধ্যে কাজ পুরোপরি সম্পন্ন হয়েছে। নৌকাটির এক পাশে রাখা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মনোরম ভাস্কর্য, অপর পাশে স্থাপন করা হয়েছে বৈঠাসহ দুই মাঝির ভাস্কর্য। পেছনের অংশে রয়েছে স্থপতি মৃনাল হকের তৈরি ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ভাস্কর্য। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকাও স্থান পেয়েছে এতে। যেন এটা নৌকার পাল। ভেতরে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দুটি কক্ষ। মঞ্চটি রাতে জ্বলে ওঠে ঝিলমিল আলোয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ একটি মঞ্চে স্বাধীনতার প্রতীক নৌকা ও দেশের স্বাধীনতার আগের মানচিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কুমিল্লার এটিই শ্রেষ্ঠ স্থাপনা হিসেবে অনেকে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
পুরো প্রকল্পটির উদ্যোক্তা, নকশা, নির্মাণ পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম। পুলিশ সুপারের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা বলেছেন, স্বাধীনতার প্রতীক মানেই বঙ্গবন্ধুর নৌকা। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল বলেন, নৌকার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর নান্দনিক ভাস্কর্য- সত্যিই অসাধারণ কাজ। দেশের প্রতিটি জেলায় এমন ভাস্কর্য নির্মাণ করা হলে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সহজেই জানতে পারবে।
পুলিশ সুপার জানান, এ তরণী মঞ্চ শিগগিরই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিসংগ্রামের প্রতীক হচ্ছে নৌকা। তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে তরণী। বই না পড়েও এটি দেখলে যে কেউ এক মিনিটের মধ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বুঝতে পারবেন। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতেই এ মঞ্চটি নির্মাণ করা হয়েছে।
এদিকে শনিবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান পুলিশ লাইন্সে ‘বঙ্গবন্ধু তরণী মঞ্চ’-এর পাশে এমএ হালিম কমিউনিটি সেন্টারে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে এসে মনোরম সাজে সজ্জিত এ নৌকা ঘুরে দেখেন এবং এর ভূয়সী প্রশংসা করেন। পরে তিনি সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।