কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের খেলার মাঠ এখন কচুক্ষেত!
থমকে গেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ খেলার মাঠ ভরাট কাজ। ডিগ্রি শাখার প্রায় ২২ হাজার শিক্ষার্থীর ক্রীড়া চর্চার একমাত্র মাঠ এটি। দুই যুগেরও বেশী সময় এ মাঠ সংস্কার না হওয়ায় খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা। জলাবদ্ধতা ও মশার উপদ্রব দিনদিন বাড়ছে, যুক্ত হয়েছে সাপ ও বিষাক্ত পোকা মাকড়ের ভয়। কর্তৃপক্ষ বলছেন, এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা চলছে।
সূত্র মতে, কুমিল্লা নগরীর প্রাণকেন্দ্রে ১৮৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ভিক্টোরিয়া কলেজ। ১৯৬০ সালে মূল শাখা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ধর্মপুর এলাকায় ডিগ্রি ক্যাম্পাস স্থাপন করা হয়। ৩২ একর আয়তনের এ কলেজে উচ্চমাধ্যমিক শাখার শিক্ষার্থীদের একটি খেলার মাঠ রয়েছে। তবে স্নাতক-স্নাতকোত্তর ও ডিগ্রি অধ্যয়নরত ২২টি বিভাগে প্রায় ২২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য খেলার মাঠ নেই।
কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও কবি কাজী নজরুল হলের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন অনিক বলেন, কলেজে খেলার মাঠ না থাকায় ঘরোয়া খেলাধুলা আর মোবাইল নিয়ে সময় অতিবাহিত করতে হয়। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুধু আনুষ্ঠানিকতা। জলাবদ্ধতার কারণে মশার উপদ্রব দিনদিন বাড়ছে। এ পচা পানিতে সাপ ও বিষাক্ত পোকার ভয় আছে।
অর্থনীতি ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা হক মিতু বলেন, প্রতিবছর শিক্ষার্থীরা ভর্তির সময় ক্রীড়া ফি দিতে হচ্ছে অথচ খেলাধুলার জন্য কোন মাঠ পাচ্ছে না। এটা একদিকে যেমন দুঃখজনক অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার শামিল। এতে নানামুখী উন্নয়ন প্রশ্নের মুখে পড়ছে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ সাংবাদিক সমিতি (কুভিকসাস) সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান রাসেল বলেন, ঐতিহ্যবাহী এ কলেজের ক্রীড়া চর্চা ও অর্জনের গৌরবান্বিত ইতিহাস রয়েছে। দুই যুগের বেশী সময় খেলার মাঠে জলাবদ্ধতা। এ মাঠটি মূল ভূমি থেকে নিচু, সারা বছর এ মাঠে পানি থাকে। খেলার মাঠটি সংস্কার হলে ২২ হাজার শিক্ষার্থী ক্রীড়া চর্চার সুযোগ পাবে।
কলেজের শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ২০১৯ সালের জুনে বর্তমান অধ্যক্ষ মহোদয় যোগদানের পর খেলার মাঠে জলাবদ্ধতাকে অন্যতম সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত করেন। সে লক্ষ্যে বিদায় বছরে আংশিক কাজও করেছেন। মাঠের পশ্চিম-উত্তরাংশ ভরাট করা হয়েছে। করোনার কারণে সে কাজটি থমকে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষা-কার্যক্রম চালু থাকলে হয়তো ইতোমধ্যে মাঠটি ভরাট হয়ে যেত।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো.রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, খেলার মাঠে জলাবদ্ধতা এ সমস্যাটি বহু বছর ধরে। গত বছর আংশিক ভরাট কাজ করেছি। প্রায় এক বছর কলেজ ফান্ডে নতুন অর্থ যোগ হচ্ছে না। দুই শতাধিক বেসরকারি কর্মচারীর বেতন প্রতি মাসে পরিশোধ করতে হচ্ছে। ধর্মপুর এলাকায় অপরিকল্পিত বাড়ি ঘরের কারণে এ সমস্যাটি হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করেছি। দীর্ঘ দিনের সমস্যা সমাধানে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রয়োজন। এলাকাবাসীর সাথে সমন্বয় প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আশা করি স্থায়ী সমাধান হবে।