কুমিল্লায় প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা
কুমিল্লায় এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, নির্যাতন ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে । গত ৩১ জানুয়ারি রোববার কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১ এ কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. রনির বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলাটি করেছেন এক নারী । মামলায় ছাত্রলীগ নেতা রনির মা হনুফা বেগমকেও আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রনি কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার চাপাপুর এলাকার বারপাড়ার কৃষ্ণপুর সর্দার বাড়ির আবু তাহেরের পুত্র।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, স্বামী প্রবাসে থাকার কারণে বাদি এক সন্তানের জননী শিশুপুত্রসহ পিত্রালয়ে বসবাস করে আসছেন। দীর্ঘদিন যাবত অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা নানা কু প্রস্তাব ও অশোভন ইঙ্গিত প্রদান করে আসছিলো প্রবাসীর স্ত্রীকে। এ নিয়ে অতীতে সালিশ বৈঠক হয় । সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে ছাত্রলীগ নেতা রনি আর এই রকম করবে না বলে অঙ্গীকার করে। কিন্তু গত ২৮ জানুয়ারি বিকালে এই প্রবাসীর স্ত্রীকে বাড়িতে একা পেয়ে ঘরে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় ছাত্রলীগ নেতা রনি। এসময় এই গৃহবধূ চিৎকার শুরু করলে রনি ও তার সাথের লোকজন তাকে লাঠি দিয়ে মারপিট করে ও তলপেটে লাথি দিয়ে আহত করে পালিয়ে যায়। পরে আহত এই নারীকে স্বজনরা উদ্ধার করে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
আদালত মামলার বিষয়টি আমলে নিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে আসামিদের আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হাজির করানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। এই পত্রের আলোকে ৯ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ারুল হক থানার এএসআই নাজিম উদ্দিনকে দায়িত্ব দেন।
মামলার তদন্তকারী কমকর্তা এএসআই নাজিম উদ্দিন বলেন, মামলাটি নারী ও শিশু নিযার্তন ট্রাইব্যুনালের ।আমাদের কাছে উভয়পক্ষের হাজিরকরণ প্রসঙ্গে নোটিশ এসেছে। আমরা তা উভয় পক্ষে দিয়েছি । রনি ও তার মাতাসহ নাম উল্লেখসহ চাঁদাবাজি ও ধর্ষণের চেষ্টা মামলা এজাহারভুক্ত, বিষয়টি আদালত দেখবেন।
কুমিল্লা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক সালাউদ্দিন আল মাহমুদ জানান, আদালত বাদির অভিযোগ গ্রহণ করে এই বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত দাখিলের জন্য কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানাকে নির্দেশ দেন।
এ সর্ম্পকে জানতে চাইলে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন রুবেল বলেন, আমরা এখনো বিষয়টি অবগত নই। বিষয়টি সত্য কিনা যাচাই-বাছাই করে যদি রনি দোষী বলে প্রমাণিত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা সংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
আমাদের সংগঠনে কখনো চাঁদাবাজ ও সন্ত্রসীদের আশ্রয় বা স্থান নেই। সংগঠরে নাম ব্যবহার করে কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করলে আমরা অতীতের মতো কঠোরভাবে গ্রহণ করবো ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার ১নং আসামি ও জেলা দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহসভাপতি রনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন । আমি আইনিভাবে এর জবাব দিবো । এটি আমার বিরুদ্ধে পূর্ব শত্রুতার জের থেকে সাজানো নাটক ।