তনু হত্যার চার বছর, তদন্তে অগ্রগতি নেই পরিবারে হতাশা
কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের চার বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। তবে এত দিনেও দেশজুড়ে বহুল আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের কোনো কিনারা হয়নি। আসামি চিহ্নিত না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে তনুর পরিবার।
তিনবার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের পর দায়িত্ব বর্তায় সিআইডির ওপর। তারাও বেশি দূর এগোতে পারেনি। অবশেষে মামলাটির তদন্তভার পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে পিবিআইয়ের অগ্রগতিও উল্লেখযোগ্য নয়।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় টেলিফোনে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন কালের কণ্ঠকে হতাশা নিয়ে বলেন, ‘আমরা এখনো জানতে পারিনি কারা খুনি। তদন্ত নিয়ে আর বলার কিছু নেই। এক সংস্থা থেকে আরেক সংস্থায় তদন্তভার যায়; কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। আমরা এখন আল্লাহর বিচারের দিকে তাকিয়ে আছি।’
২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেননি তনু। পরে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে বাসার কাছাকাছি একটি জঙ্গলে তাঁর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরদিন তাঁর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, থানার পুলিশ ও ডিবির পর ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি কুমিল্লা। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। ২০১৭ সালের মে মাসে সিআইডি তনুর পোশাক থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
সূত্র মতে, তনুর মা আনোয়ারা বেগম মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে বহুবার বলেছেন, তাঁর মেয়ে তনুকে এক ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রী ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁদের গ্রেপ্তার করলেই এ হত্যাকাণ্ডের জট খুলবে।
জানতে চাইলে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মুজিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি। কিছুদিন আগে দায়িত্ব পেয়েছি। তনুর পরিবারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছি আমরা। আমাদের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।’
তনু হত্যাকাণ্ডের চার বছরে গতকাল বাদ জুমা স্থানীয় দুটি মসজিদে তনুর আত্মার শান্তির জন্য মিলাদ পড়ানো হয় বলে জানান তাঁর বাবা ইয়ার হোসেন।
সূত্রঃ কালেরকন্ঠ