কুবিতে শিবির সন্দেহে ফের শিক্ষার্থীকে পেটাল ছাত্রলীগ

ডেস্ক রিপোর্টঃ শিবির সন্দেহে আবারও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। হামলার শিকার ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সপ্তম ব্যাচের ছাত্র।

আজ রবিবার বিকেলে কুবির প্রধান ফটকের সামনে ওই শিক্ষার্থীর উপর এ হামলার ঘটনা ঘটে। এদিকে, এর আগে গত ৯ আগস্ট শিবির কর্মী আখ্যা দিয়ে কুবির দুই শিক্ষার্থীকে একইভাবে মারধরের অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিবিরের কর্মী সন্দেহে রবিবার বিকেলে কুবির ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রায়হান ইসলামের ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে হামলা করে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই শিক্ষার্থীকে কাঠ দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে তার সঙ্গে থাকা মোবাইল সেটসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস কেড়ে নেয়। এ ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে তার বন্ধুরা উদ্ধার করে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়।

হামলায় আহত রায়হানসহ কুবির অন্তত ৫ জন শিক্ষার্থী জানায়, ওইদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ৭ম ব্যাচের ছাত্র সাইফুল ইসলাম সাদী, ছাত্রলীগ কর্মী হাসান বিদ্যুৎ, রাফিউল আলম দীপ্তসহ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ৫/৬ জন নেতাকর্মী রায়হানকে ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে নিয়ে যায়। এরপর শিবিরের কর্মী বলে কাঠ দিয়ে তাকে পেটানো শুরু করে তারা। তবে হামলার শিকার ওই শিক্ষার্থীর দাবি তিনি কোনো রাজনীতির সঙ্গেই জড়িত নন।

আজ রবিবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল হাসান সাদীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসের সবুজ বলেন, এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিবির করলেই ছাত্রলীগ কি এভাবে শিক্ষার্থীদের পেটাবে এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান ইলিয়াস।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুবির প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়ে কোনো অভিযোগ এখনো আমি পাইনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, এর আগে গত ৯ আগস্ট কুবির দুই শিক্ষার্থীকে শিবিরের কর্মী আখ্যা দিয়ে মারধরের অভিযোগে উঠে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

সূত্রে জানা যায়, সিলেটে দুই ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম করার প্রতিবাদে ওইদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নামিয়ে গণিত বিভাগের নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আবদুর রহমানকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনের চায়ের দোকানের পাশে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তাকে বেধড়কভাবে পিটিয়ে আহত করে ছাত্রলীগের ওই নেতাকর্মীরা।

এ ঘটনার খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন ও সহকারী প্রক্টর মো. খলিলুর রহমান ওই শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এর কিছুক্ষণ পরে ইংরেজি বিভাগের সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাগোয়া সামাজিক বন বিভাগ এলাকায় নিয়ে ফের শিবিরের কর্মী বলে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ভুক্তভোগী ওই দুই শিক্ষার্থীও দাবি করেন, তারা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। শিবিরের সঙ্গেও তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ

আরো পড়ুন