কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ মাসের প্রকল্প শেষ হয়নি ৪ বছরেও
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষক ডরমেটরি নির্মাণ কাজের ১৮ মাস মেয়াদের প্রকল্প শেষ হয়নি ৫২ মাসেও। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের মে মাসে বিশ্ববিদ্যালয়েল শিক্ষক ডরমেটরি নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এতে ভবনের কাজ পায় জাকির এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এরপর কয়েক ধাপে বাড়ানো হয় প্রকল্পের মেয়াদ। এরপর চার বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি এই ডরমেটরির কাজ।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি বিভাগে শিক্ষক রয়েছেন ২৭১ জন। তাদের মধ্যে মাত্র ২৮ জন শিক্ষক পাচ্ছেন আবাসন সুবিধা। যা মোট শিক্ষকের অনুপাতে মাত্র ১০ শতাংশ। শিক্ষকদের বসবাসের জন্য আলাদা কোনো ডরমেটরি না থাকায় বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষকদের। তিনতলা বিশিষ্ট শিক্ষক ডরমেটরি প্রকল্পে মোট ৩৬টি রুম হওয়ার কথা রয়েছে। যার মধ্যে প্রথম তলায় ১৩টি, দ্বিতীয় তলায় ১২টি এবং তৃতীয় তলায় ১৪টি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পার হলেও শিক্ষকদের জন্য নেই কোনো স্বতন্ত্র আবাসন ব্যবস্থা। প্রশাসনের সুষ্ঠু তদারকির অভাব, অদক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া, অদক্ষ জনবল দিয়ে কাজ করানো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরের ব্যর্থতায় এখনো কাজ শেষ হয়নি বলে অভিযোগ করেন তারা। কিন্তু এই অনিয়মের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তর কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভবনের দুইতলার কাজ আংশিক সম্পন্ন হয়েছে। তিন তলার কাজ কিছুটা করা হলেও ৫-১০ জন শ্রমিক দিয়ে খুঁড়িয়ে চলছে প্রকল্পটি। বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকতে দেখা যায় নির্মাণকাজ। মূল প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জাকির এন্টারপ্রাইজ হলেও তৃতীয় ব্যক্তি জাহাঙ্গীর আলমের তদারকিতে চলছে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ।
ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা সঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে পারিনি। প্রকল্পের মেয়াদ আর বেশি দিন নেই। এখন যে কোনো উপায়ে আমরা ডিসেম্বর এর ভিতর কাজ শেষ করে ফেলবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমাদের টেন্ডারের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে দিয়েছি বর্তমান যারা ঠিকাদার আছে তারা আর কোনো টেন্ডারের আবেদন করতে পারবে না। আমরা তাদের কে নতুন করে কোনো কাজ দিচ্ছি না। তাদের থেকে আমরা যে কোনো মূল্যে ডিসেম্বর এর মধ্যে কাজ আদায় করে নিবো।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী জানান, ডিসেম্বর এর ভেতর কাজ বুঝে নেওয়ার জন্য কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে।