কুমিল্লায় মণ্ডপে কোরআন রাখল কারা ?
দুর্গাপূজায় সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে গত বুধবার ভোরে কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার পর ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। নানুয়ার দিঘির পাড়ের ওই মণ্ডপে চলে ব্যাপক ভাঙচুর, আক্রান্ত হয় নগরীর আরও বেশকিছু পূজামণ্ডপ। পরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়।
যেখান থেকে সাম্প্রদায়িক এই সহিংসতার শুরু সেই নানুয়ার দিঘির পাড়ের মণ্ডপে কীভাবে উত্তেজনার শুরু এবং মূল মণ্ডপের বাইরে পূজার থিম হিসেবে রাখা হনুমানের মূর্তির ওপর পবিত্র কোরআন শরিফ কী করে এলো? পূজার আয়োজক, এলাকাবাসী, তদন্তকারী কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টির পরিকল্পনায় সরাসরি যুক্ত অন্তত তিনজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তদন্তসংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মণ্ডপে যিনি ভোররাতের দিকে কোরআন শরিফ রেখেছেন, তাকেও চিহ্নিত করা গেছে। মণ্ডপটিতে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকলেও আশপাশের কয়েকটি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে মূল অভিযুক্তের ছবি। যেকোনো সময়ে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আশাবাদী পুলিশ কর্মকর্তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কুমিল্লায় সহিংসতার মূল অভিযুক্ত পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। শিগগিরই তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কুমিল্লার ঘটনা যে ঘটিয়েছে সে বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে, স্থান পরিবর্তন করছে। আমরা তাকে ধরব। কেন এই কাজ করেছে, তার জবাব দিতে হবে। আপনাদের জানাব।’
নানুয়ার দিঘির পাড়ের মণ্ডপটিতে বুধবার ভোরে কোরআন শরিফ পাওয়ার আগের কয়েক ঘণ্টায় কী ঘটেছিল, তার একটি সময়ক্রম (টাইমলাইন) তৈরি করা হয়েছে। মন্দিরসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, এলাকাবাসী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কথা বলে এবং বিভিন্ন নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আগের রাত আড়াইটা পর্যন্ত মন্দিরে পূজাসংশ্লিষ্টদের উপস্থিতি ছিল। এরপর বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দুজন নারী ভক্ত মণ্ডপে এসে হনুমানের মূর্তিতে প্রথম কোরআন শরিফটি দেখতে পান।
রাত আড়াইটা থেকে ভোর সাড়ে ৬টার মধ্যে স্থানীয় এক ব্যক্তি কোরআন শরিফটি রেখে যান মণ্ডপে। এ সময় হনুমানের হাতের গদাটি সরিয়ে নেন তিনি। গদা হাতে তার চলে যাওয়ার দৃশ্যও ধরা পড়েছে ওই এলাকারই কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরায়।
আগের রাতে কখন কী হয়েছিল মণ্ডপে
বেশ কয়েক বছর ধরে নানুয়ার দিঘির পাড়ের এই অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করেন শিমুল গোস্বামী ও তার ভগ্নিপতি রাজিব চক্রবর্তী। রাত ১০টায় পূজা শেষে বাসায় ফেরেন শিমুল ও রাজিব। তখনও ভক্ত-দর্শনার্থীর ভিড় ছিল। শিমুল গোস্বামী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাসায় ফিরে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে যাই। কারণ সকালেই আবার পূজা শুরু করতে হয়।’
পরদিন কখন মণ্ডপে গিয়েছিলেন, জানতে চাইলে শিমুল তিনি বলেন, ‘তিথি অনুসারে বুধবার সকাল ৮টায় পূজা শুরু হওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী আমি ও আমার ভগ্নিপতি রাজিব চক্রবর্তী সকালে ঘুম থেকে উঠে মণ্ডপে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তখনই জানতে পারি মণ্ডপে গন্ডগোল চলছে। তাই আর বাসা থেকে আর বের হইনি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, মণ্ডপে কোরআন শরিফ পাওয়ার সময় সেখানে পুরোহিত উপস্থিত ছিলেন। তারা কোরআন সরাতে অস্বীকৃতি জানান। তবে এ অভিযোগ নাকচ করে শিমুল গোস্বামী বলেন, তারা হাঙ্গামার খবর পেয়ে সেদিন সকালে মণ্ডপেই যাননি। এলাকাবাসী ও মণ্ডপসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেও এর সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
নানুয়া দিঘির পাড়ে এই পূজা উদযাপন হয় দর্পণ সংঘের ব্যানারে। পূজা কমিটির সভাপতি সুবোধ রায় কর্মকার জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় তিনি নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে মণ্ডপে আসেন। কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থান করে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে নগরীর কান্দিরপাড়ে যান। রাত সাড়ে ১২টায় আড্ডা শেষে বাসায় ফেরার পথে সুবোধ আবার মণ্ডপের পাশে দাঁড়ান। তখন ভক্ত-দর্শনার্থী বেশ কম ছিল। এরপর বাসায় এসে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে যান। সকালে মানুষজনের চিৎকার শুনে উঠে গিয়ে দেখেন মণ্ডপজুড়ে মানুষের ভিড়।
পূজার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন দিঘির পাড়ের বাসিন্দা তরুণ কান্তি মোদক। স্থানীয়রা তাকে মিথুন নামে চেনেন। মিথুন জানান, রাত আড়াইটা পর্যন্ত তিনি মণ্ডপে ছিলেন। তখন পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। এরপর তিনি নৈশপ্রহরী শাহিনের কাছে মণ্ডপের নিরাপত্তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বাসায় ফেরেন।
মিথুন বলেন, ‘রাত আড়াইটা থেকে ভোর পর্যন্ত কী হইছে, তা ভালো বলতে পারবে নৈশপ্রহরী শাহিন। সে এখন পুলিশের হেফাজতে আছে।’
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মঙ্গলবার রাত আড়াইটা থেকে পরের চার ঘণ্টায় মণ্ডপ ছিল জনশূন্য। সে সময় এর পাহারায় ছিলেন মো. শাহিন মিয়া।
নৈশপ্রহরী শাহিনকে নিয়োগ দেয়া হয় আগের বৃহস্পতিবার থেকে। মণ্ডপে তখন থেকেই প্রতিমা ছিল।
শাহিন অ্যালার্ট সিকিউরিটিজ অ্যান্ড অ্যাটেনডেন্ট সার্ভিসেস নামের নিরাপত্তাসেবা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ৪৫ বছর বয়স্ক শাহিনের বাসা নগরীর সংরাইশ এলাকায়।
অ্যালার্ট সিকিউরিটিজ অ্যান্ড অ্যাটেনডেন্ট সার্ভিসেসের ব্যবস্থাপক শাহাজাদা ইকরাম রিপন বলেন, ‘বছর দুয়েক আগে শাহিন আমাদের কোম্পানিতে চাকরি নেয়। পরে আবার চাকরি ছেড়ে দেয়। তবে মাস দেড়েক আগে সে আবার আমাদের কোম্পানিতে যোগ দেয়। মাঝে সে কোথায় ছিল আমরা জানি না।’
শাহিন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএনপির মিছিল মিটিংয়ে দেখা যেত তাকে। এর বেশি কিছু আমি জানি না।’
পূজামণ্ডপের পাশেই পরিবার নিয়ে থাকেন মনিরুজ্জামান। তিনি জানান, রাত প্রায় ৩টার দিকে হঠাৎ দমকা বাতাস বইতে থাকে। এ সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। এর পরেই নানুয়ার দিঘির পাড় এলাকা নিস্তব্ধ হয়ে যায়। পরে সকালে তিনি মানুষের শোরগোল শুনতে পান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন পোস্টে দাবি করা হয়েছে, বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পরপরই সেখানে একটি পুলিশের গাড়ি গিয়েছিল। পুলিশ কয়েক যুবককে ঘোরাঘুরি করতে দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়। গাড়িটি এর পরপরই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনওয়ারুল আজিম জানান, তাদের একটি টহল দল মণ্ডপ এলাকায় গিয়েছিল, তবে সেটি রাত ২টার দিকে। নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবেই দলটি সেখানে যায়। তবে তখন সন্দেহজনক কিছু দেখা যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নানুয়ার দিঘির পাড়ে পূজা দিতে আসা দুজন নারী ভক্ত প্রথম কোরআন শরিফটি দেখতে পান। এ নিয়ে তারা বিস্ময় প্রকাশের সময় ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ইকরাম হোসেন (৩০) নামে একজন।
ইকরাম নগরীর কাশারিপট্টির রিকশাচালক বিল্লাল হোসেনের ছেলে। ইকরাম বিবাহিত হলেও স্ত্রীর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। মাদকাসক্ত হওয়ায় তিনি পরিবার থেকেও বিচ্ছিন্ন। ইকরাম পাইপ মিস্ত্রির কাজ করেন।
তদন্তসংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, মণ্ডপে কোরআন রাখায় যে চক্রটি জড়িত, ইকরাম তাদের একজন। তিনিই বুধবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে ৯৯৯-এ কল করেন। তারপর ওসি আনওয়ারুল আজিম ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি কোরআন শরিফটি উদ্ধারের পাশাপাশি ইকরামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যান।
নগরীর বজ্রপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন চিনু রানী দাশ। নানুয়ার দিঘির পাড়ের পূর্ব পাড়ের একটি বাসায় তিনি গৃহকর্মীর কাজ করেন। ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তিনি মণ্ডপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি দেখতে পান দুই নারী মণ্ডপে কোরআন শরিফ দেখে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন।
চিনু রানী বলেন, ‘এ সময় এক ছেলে ছুটে এসে চিৎকার করে বলে, হনুমানের পায়ের কাছে কোরআন, কেউ এখানে থাকবেন না। আর যে কোরআন এখান থেকে সরিয়ে নেবে তার হাত কেটে ফেলা হবে।’
এ কথা শুনে ভয় পেয়ে যান চিনু। তিনি বলেন, ‘আমি একটু সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে ঘটনা দেখছিলাম। ছেলেটা কাকে যেন ফোন দিয়ে কোরআনের বিষয়টা জানায়। এর কিছুক্ষণ পর সিএনজি দিয়ে একজন লোক আসে। সে এসে কোরআন শরিফটিকে বুকের মধ্যে নেয়।’
সিএনজি অটোরিকশায় আসা ওই ব্যক্তিই হলেন কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনওয়ারুল আজিম। তিনি বলেন, ‘আমি ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে একটা সিএনজিতে করে দ্রুত মণ্ডপে আসি।’
পুলিশের গাড়ির পরিবর্তে অটোরিকশা বেছে নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছি। তখন থানার গাড়ির ড্রাইভার ছিলেন না। তাই দেরি না করেই সিএনজি নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পবিত্র কোরআন শরিফটি আমার হেফাজতে নেই।’
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ইকরাম রাতে নেশা করেছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন ওই রাতে ৩ পিস ইয়াবা সেবন করেন। পরে মণ্ডপের পাশে অবস্থান নেন। মণ্ডপে কোরআন রাখেন একজন। আর ইকরামের দায়িত্ব ছিল, ভোরে বিষয়টি পুলিশকে জানানোর। সে অনুযায়ী তিনি ৯৯৯-এ ফোন করেন।
ওসি আনওয়ারুল আজিম মণ্ডপ থেকে কোরআন উদ্ধারের সময় সেটি ফেসবুকে লাইভ করেন ফয়েজ নামের এক যুবক। সেই লাইভের পরেই উত্তেজিত মানুষ জড়ো হন ঘটনাস্থলে, শুরু হয় সহিংসতা। এই ফয়েজকেও আটক করেছে পুলিশ।
স্পর্শকাতর ইস্যুতে ফয়েজ ফেসবুক লাইভের সুযোগ কীভাবে পেলেন, জানতে চাইলে ওসি আনওয়ারুল আজিম বলেন, ‘আমি তখন মোবাইল ফোনে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাতে ব্যস্ত ছিলাম। এ সময় ৩০-৪০ জন ঘটনাস্থলে ছিল, তাই কে লাইভ করছে খেয়াল করতে পারিনি।’
লাইভে আপনি নিজেকে কোতোয়ালির ওসি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন- এমন তথ্য তুলে ধরলে তিনি বলেন, ‘তখন আমি বুঝতে পারিনি লাইভ হচ্ছে।’
মাজারের কোরআন শরিফ মণ্ডপে?
তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাদের ধারণা দিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপ থেকে যে কোরআন শরিফটি উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি আনা হয় পাশের একটি মাজার থেকে।
নানুয়া দিঘির পাশেই শাহ আবদুল্লাহ গাজীপুরি (রা.)-এর মাজারটির অবস্থান, মণ্ডপ থেকে হেঁটে যেতে সময় লাগে ২ থেকে ৩ মিনিট। দারোগাবাড়ী মাজার নামে কুমিল্লাবাসীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিতি রয়েছে মাজারটির। এর বারান্দায় দর্শনার্থীদের তিলাওয়াতের জন্য রাখা থাকে বেশ কয়েকটি কোরআন শরিফ। রাত-দিন যেকোনো সময় যে কেউ এখানে এসে তিলাওয়াত করতে পারেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওই কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন, মণ্ডপে রাখার জন্য এই মাজার থেকেই নিয়ে যাওয়া হয় একটি কোরআন শরিফ।
মাজারের পাশে পূজায় আপত্তি?
দারোগাবাড়ী মাজারের মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করতেন এমন তিনজনকে ঘটনার পর থেকে দেখা যাচ্ছে না। তাদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একজনের নাম হুমায়ুন কবীর (২৫), আরেকজনের বিষয়ে তথ্য পেলেও তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
দারোগাবাড়ী মাজারের খাদেম আহামুদ্দুন্নাবী মাসুক জানান, হুমায়ুন মাজারে এসে নামাজ আদায় করতেন। তার বাড়ি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার দেওরা এলাকায়। ঘটনার পরদিনই তাকে পুলিশ নিয়ে যায়। এ ছাড়া মাজারে আরও দুই-একজন নামাজ আদায় করতেন। তাদের এখন আর দেখা যাচ্ছে না।
কুমিল্লা জেলা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ‘মাজারে নিয়মিত যাওয়া ওই তিন যুবকই মণ্ডপে কোরআন রাখার পরিকল্পনায় জড়িত। তাদের মধ্যে দুজনকে আমরা আটক করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে তারা অনেক তথ্য দিয়েছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজেও ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি।
‘তবে তৃতীয় যুবককে আটক করতে পারলে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। কারণ তিনিই সরাসরি মণ্ডপে কোরআন রেখেছিলেন। তাকে ধরতে আমাদের অভিযান চলছে।’
কেন এমন পরিকল্পনা, জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, মাজারের কাছে পূজার বিষয়টি ওই চক্রটি পছন্দ করছিল না। সে জন্যই পরিকল্পনাটি করা হয়। তবে এর পেছনে আরও বড় কোনো উদ্দেশ্য ছিল কি না, সেটি তদন্ত শেষে বলা যাবে।’
সূত্রঃ নিউজবাংলা