কুমিল্লা কারাগারে বন্দির মৃত্যু, ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের তিন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা হয়েছে। কুমিল্লা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের ১ নম্বর আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের হয়। সম্প্রতি কারাগারে বন্দি অবস্থায় মারা যাওয়া মো. আলমগীর হোসেনের স্ত্রী নাছিমা বেগম মামলাটি করেন।
দায়িত্বে অবহেলার কারণে কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ঝাঁকুনিপাড়া গ্রামের আলমগীরের (৫২) মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় বিবাদি করা হয়েছে, কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শাহজাহান আহম্মেদ, জেলার মো. আসাদুর রহমান, ডেপুটি জেলার (হাজতি ভর্তি শাখা) মো. আরিফুল ইসলাম ও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। আজ বুধবার পর্যন্ত আদালতের আদেশ থানায় পৌঁছেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলায় বলা হয়েছে যে, চান্দিনা থানা পুলিশ গত ৩ ফেব্রুয়ারি ৭০ বোতল ফেনসিডিলসহ মো. আলমগীর হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কারাগারে পাঠায়। গত ১ মে হঠাৎ বুকে ব্যথা উঠলে কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেদিনই কারা চিকিৎসকের নির্দেশে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৯ মে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে পাঠাতে রেফার করে। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ তাকে সেটি না করে আবার কারাগারে ফেরত নিয়ে যায়। সেখানেই ৩১ মে তার মৃত্যু হয়। অবহেলা ও বিনা চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার বিষয়ে নাছিমা বলেন, গত ৩১ মে দুপুরে কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তিনি তার স্বামীর মৃত্যুর খবর পান। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ গ্রহণ করে বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। নাছিমার অভিযোগ, কারা কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায় ২২ দিন বিনা চিকিৎসায় বন্দি রেখে তার স্বামীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
নাছিমার আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া জানান, আদালত বাদির অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
দুপুরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শাহজাহান আহমেদ বলেন, মামলার বিষয়টি জানা নেই। ওই বন্দিকে ঢাকায় রেফার করা হয়নি, তার এনজিওগ্রাম করতে বলা হয়েছিল। আমরা এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইজি অফিসে আবেদন করেছি, কিন্তু অনুমোদনপত্র পাওয়ার ৫-৬ দিন আগেই তিনি মারা যান। তার চিকিৎসায় কোনো অবহেলা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল আজিম জানান, আদালতের আদেশ এখনো হাতে পাইনি, পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।