কুমিল্লা সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির গ্রুপিং প্রকাশ্যে, সংঘাতের আশঙ্কা
২০১২ ও ২০১৭ সালে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মনিরুল হক সাককুর বিরুদ্ধে বিএনপির অন্য কোনো প্রার্থী মাঠে ছিলেন না। তবে এবার মাঠে রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার। বিএনপির এই দুই নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে থাকায় তফসিল ঘোষণার পর দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে গ্রুপিংয়ে জড়িয়ে পড়েছেন। সাককুর সঙ্গে কায়সারের রাজনৈতিক বিরোধ দীর্ঘদিনের। তাদের এ বিরোধ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। অনেকে মনে করছেন, কায়সার নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন মূলত সাককুকে ঠেকাতে।
মনিরুল হক সাককু কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। আর কায়সার কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার দুজনেরই মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার। এরপর ঐ দিন দুপুরে কায়সার এবং সন্ধ্যায় সাককু দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নেতাকর্মীদের ভয় নির্বাচনী মাঠে তারা যদি নামেন তাহলে নিজেদের ওপর নেমে আসতে পারে বিপদ। এ নিয়ে বেশ বিপদে রয়েছেন দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপি দুই ধারায় বিভক্ত। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ বিভক্তি অনেকটা প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এক পক্ষে রয়েছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন। আরেক পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাককু। এবার কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিজাম উদ্দিন কায়সার বিএনপি নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের শ্যালক।
নগরীর কান্দিপাড় এলাকার বাসিন্দা বিএনপির তৃণমূল কর্মী ফয়েজ উল্লাহ বলেন, নির্বাচন নিয়ে তৃণমূল কর্মীরা আতঙ্কে রয়েছেন। কারণ অনেক কর্মী ভালো একটি পদে যেতে দলের জন্য কাজ করেন। এবার মনে হচ্ছে তৃণমূল কর্মীরা দুই প্রার্থীর কারো পক্ষে মাঠে নামলে বিপদে পড়তে হবে।
নগরীর ছোটরা এলাকার বিএনপি কর্মী মাহাবুব আলম বলেন, একে তো বিএনপির দুই গ্রুপ নির্বাচনী মাঠে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে, তার ওপর দলের পক্ষ থেকে যেসব বিধি-নিষেধ দেওয়া হচ্ছে। এতে কর্মীরা আতঙ্কে আছেন।
জানতে চাইলে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির দফতর সম্পাদক সরওয়ার জাহান ভূঁইয়া দোলন বলেন, আমরা তৃণমূল নেতাকর্মীদেরও নির্দেশনা দিচ্ছি নির্বাচনী মাঠে না নামতে।