আজ ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা মুক্ত দিবস
ডেস্ক রিপোর্টঃ আজ কুমিল্লা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে কুমিল্লা পাক হানাদার বাহিনী থেকে মুক্ত হয়। র্দীঘ নয় মাসের যুদ্ধ আর নির্যাতনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীসহ সর্বস্তরের জনগণের উল্লাস ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠে এলাকা। মুক্ত হয় কুমিল্লা।
মুক্তিযোদ্ধাদের সূত্র জানায়, ৭ ডিসেম্বর রাতে তিনদিকে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী কুমিল্লা বিমান বন্দরে পাক বাহিনীর ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের ঘাঁটিতে আক্রমণ শুরু করে। পাক বাহিনীর অবস্থানের উপর মুক্তিসেনারা মর্টার আর্টিলারি আক্রমণ চালিয়ে শেষ রাতের দিকে তাদের আত্মসমর্পণ করাতে সক্ষম হয়।
সারা রাতব্যাপি পাকবাহিনীর সাথে যুদ্ধে ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পাক বাহিনীর কতিপয় সেনা বিমান বন্দরের ঘাটি ত্যাগ করে শেষ রাতে বরুড়ার দিকে এবং সেনানিবাসে ফিরে যায়। বিমান বন্দরের ঘাঁটিতে ধরা পড়া কিছু পাক সেনা আত্মসমর্পণ করে।
রাতে মিত্রবাহিনীর ১১ গুর্খা রেজিমেন্টের আর কে মজুমদারের নেতৃত্বে কুমিল্লা বিমানবন্দরের তিনদিকে আক্রমণ চালানো হয়। এছাড়া সীমান্তবর্তী বিবির বাজার দিয়ে লেঃ দিদারুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল এবং অপর দুটি দল গোমতী নদীর অতিক্রম করে ভাটপাড়া দিয়ে এবং চৌদ্দগ্রামের বাঘের চর দিয়ে এসে বিমান বন্দরের পাক সেনাদের ঘাটিঁতে আক্রমণ করে। রাতের মধ্যে বিমান বন্দরের ঘাঁটিতে অবস্থানরত পাক সেনাদের সাথে মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনীর যৌথ বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে পাকসেনাদের প্রধান ঘাঁটি পতনের মধ্য দিয়ে পরদিন ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা পাক সেনা মুক্ত হয়।
এদিন ভোরে মুক্তিসেনারা শহরের চকবাজার টমছমব্রিজ ও গোমতী পাড়ের ভাটপাড়া দিয়ে আনন্দ উল্লাস করে শহরে প্রবেশ করে। তখন রাস্তায় জনতার ঢল নামে।
কুমিল্লার আপামর জনগণ সূর্য সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বরণ করে নেয়। পরে এদিন বিকেলে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা, মিত্রবাহিনী ও জনতার উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
তৎকালীন পশ্চিম পূর্বাঞ্চলের প্রশাসনিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মরহুম জহুর আহমেদ চৌধুরী দলীয় পতাকা এবং কুমিল্লার প্রথম প্রশাসক অ্যাডভোকেট আহমেদ আলী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ।