মুশফিকের রহস্যময় জ্বরেই পতন রংপুর রাইডার্সের!
সিলেট স্ট্রাইকার্সের কাছে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ১৯ রানে হেরে বিপিএলের নবম আসর শেষ হয়ে গেছে রংপুর রাইডার্সের। টস হেরে আগে ব্যাট করে সিলেট ৭ উইকেটে ১৮২ রান তোলে। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৩ রানের বেশি করতে পারেনি রংপুর। ১৮২ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় রংপুর। দলীয় ৩ রানেই ইংলিশ ব্যাটসম্যান স্যাম বিলিংস এলবিডব্লিউ হন তানজিম হাসান সাকিবের বলে।
গতকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯ রানে হেরে বিপিএল থেকে বিদায় নেয় রংপুর রাইডার্স। তবে সব কিছু এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। ম্যাচ শেষে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয় মুশফিকের জ্বর। স্বাভাবিকভাবে ব্যাট হাতে নামতে দেখা গেলেও ফিল্ডিংয়ের সময় সেভাবে নামতে দেখা যায়নি তাকে। তার জায়গায় কিপিং করেন আকবর আলি। জানা যায় জ্বরের কারণে মাঠে নামেননি মুশি। পরে খেলার শেষ হতে যখন ৩ ওভার বাকি, তখনিই মাঠে নামেন তিনি। মুশফিক মাঠে নামার আগে ভালোভাবেই নিজেদের দায়িত্ব পালন করছিলেন নুরুল হাসান সোহান ও রনি তালুকদার। তখন ১৮ বলে দরকার ৩৩ রান। ঠিক তখনই মুশফিক মাঠে নামলে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই যেন ধ্বস নামে ব্যাটিং লাইন-আপে। হারাতে থাকে উইকেট। ফলে সেই রান আর টপকাতে পারেনি তারা। ১৯ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিলেট।
তবে বিষয়টা ভালোভাবে নেয়নি রংপুর রাইডার্সের কোচ সোহেল ইসলাম। মুশফিকের এই ‘রহস্যময় জ্বর’কে হারের কারণ হিসেবে দেখছেন তিনি। যা ম্যাচের মোমেন্টাম নষ্ট করে দিয়েছে বলে অভিযোগ তার। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘ওই সময়টায় খেলার মোমেন্টাম আমাদের দিকে ছিল। খেলার একটা ফ্লো ছিল। ওই সময় জাকির বের হলো (কিপিং প্যাড, গ্লাভস পরতে)। উইকেটকিপার বদল হলো। একটা মোমেন্টাম শিফট ছিল। খেলার একটা ফ্লো ছিল। ওই সময় মোমেন্টাম আসলে ব্রেক ডাউন হয়ে যায়। এটা টি-টোয়েন্টিতে একটা দলের জন্য, একটা যখন ফ্লো থাকে তখন সেটা বাধাগ্রস্ত হলে এরকম হতে পারে (ধ্বস)। সেটাই হয়েছে।’
এটা কি সিলেটের ম্যাচ জয়ের কোনো কৌশল ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জানি না তাদের কৌশল ছিল না। যেটা হয়েছে মুশফিক বেশ স্বাভাবিকভাবে ব্যাট করেছে। তো আমি জিজ্ঞেস করেছি চতুর্থ আম্পায়ারকে যে সে কীসের জন্য বাইরে আছে। তারা বলেছে যে তার জ্বর এসেছে। সেজন্য আসলে বাইরে। আমার কথা হচ্ছে জ্বর যখন আসবে এর দায়িত্ব কি অন্য দল নিবে? নিশ্চয়ই না। মাঠের মধ্য থেকে যদি চোট হয় সেক্ষেত্রে যেটা নিয়ম আছে সেটা হবে। যদি জ্বর আসে…সেই ব্যাপারটা নিয়ে কথা হচ্ছিল। পরবর্তীতে মুশফিক যখন নামে তখন বেশ কিছু সময় চলে গেছে। এটা এক-দুই মিনিটের ব্যাপার না। পাঁচ-ছয় মিনিটের ব্যাপার। ওই সময় আমরা বেশ ভালো অবস্থায় ছিলাম। একটা ফ্লো ছিল। আমার কাছে মনে হয় এই জায়গায়। এই ফ্লো নষ্ট হয়ে যাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ ছিল।’
রনি আর সোহান কি বলছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সে বলছিল কেন আমরা এই সময় বলি নাই (আম্পায়ারদের) কেন আগে খেলা শুরু করতে। রনি আর সোহান যেটা বলছিল একই কারণে মুশফিক কেন বাইরে আছে। এটা আমরা পরিস্কার ছিলাম না। কেউ বলছিল আঙুলে ব্যথা পাওয়ার জন্য বাইরে আছে, কেউ বলছে জ্বর আসছে।’ বিপক্ষ দলের সঙ্গে সিলেটের কোনো আলোচনা হয়নি জানিয়ে সোহেল বলেন, ‘আমাকে যেটা বলেছে মুশফিকের জ্বর আসছে সেজন্য মুশফিক কিপিং করতে পারছে না। আমাদের অধিনায়ক এই বিষয়ে জানত না। আমাদের এই ব্যাপারে কিছু তথ্য দেয়া হয় নাই। জ্বর আসছে…পরে আবার এমন এক সময় নেমেছে যখন মোমেন্টাম নষ্ট হয়েছে।’