কুমিল্লায় পুলিশ কর্মকর্তার কাণ্ড!
কুমিল্লার চান্দিনায় জমিসংক্রান্ত বিরোধ মিটিয়ে সম্পত্তি দখল দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তা নার্গিস আক্তার চান্দিনা থানায় সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পদে কর্মরত।
সেবাগ্রহীতা ওই নারী জ্যোৎস্না আক্তার উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের কাশারীখোলা গ্রামের তাজুল ইসলামের স্ত্রী। তিনি বলেন, আমার আপন ভাইয়ের সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। আমার ভাই ১৬ শতাংশ জমি জোর করে দখল করে গাছ-পালা কেটে নেওয়ায় আমি নিরুপায় হয়ে পুলিশের সাহায্য নিতে ৪ ফেব্রুয়ারি থানায় যাই। এ সময় থানার ডিউটি অফিসার ছিলেন এএসআই নার্গিস আক্তার। ডিউটি অফিসার আমার কাছ থেকে সব কিছু শুনে একটি লিখিত দরখাস্ত গ্রহণ করে থানায় খরচ লাগবে বলে আমার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নেন। তার একদিন পর আমার জমির সব সমস্যা সমাধান করে দিবে বলে আমার কাছ থেকে লাখ টাকা এবং সার্ভেয়ার খরচ বাবদ আরও পাঁচ হাজার এবং গাড়ি ভাড়া বাবদ দেড় হাজার টাকাসহ সর্ব মোট এক লাখ ১১ হাজার ৫শ টাকা নেন তিনি।
এক লাখ টাকা কিভাবে নিয়েছে জানতে চাইলে ওই সেবাগ্রহীতা নারী জানান, আপায় (এএসআই নার্গিস) আমার কাছে এক লাখ টাকা এবং খেজুরের রস খাইতে চায়। আমি গত ৬ ফেব্রুয়ারি তার বাসায় গিয়ে খেজুরের রস ও এক লাখ টাকা দিয়ে আসি। আপা আমার বাড়ি এসে সবকিছু দেখে যান। পরবর্তীতে তিনি আমার সমস্যা সমাধান না করে আমার ওই জিডি আদালতে পাঠিয়ে দেন। এ বিষয়ে আমি থানার ওসি সাহেবকে সব কিছু জানিয়েছি।
চান্দিনা থানায় সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নার্গিস আক্তার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি ডিউটি অফিসার থাকাকালীন ওই নারীর জিডি গ্রহণ করি, কিন্তু কোনো প্রকার টাকাপয়সা আমি নিইনি।
চান্দিনা থানার ওসি মো. সাহাবুদ্দীন খান জানান, এএসআই নার্গিস ওই দরখাস্তটি তদন্তের জন্য আমার কাছ থেকে তার নামে হাওলা করে নেন। ওই সেবাগ্রহীতা নারীর কাছ থেকে টাকাপয়সা নিয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজিজুল ইসলামকে দায়িত্ব দিয়েছি।
থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজিজুল ইসলাম জানান, সেবা গ্রহীতা ওই নারী জমি জমার টেনশনে মানসিক সমস্যা আছেন। এক লাখ টাকা প্রদানের বিষয়টি সত্য নয়। তবে যতটুকু জেনেছি দুইপক্ষের একজনে আট হাজার ও আরেকজনে ১০ টাকা দিয়েছেন; সেই টাকা সার্ভেয়ার দিয়ে জরিপ করাতেই শেষ।