কুয়াশার চাদরে মোড়া কুমিল্লার দক্ষিণাঞ্চল
আজ ৩০ চৈত্র। ঋতুচক্রে বসন্ত। আর বসন্ত মানে প্রকৃতির যৌবনকাল। চৈত্র মাসে কাঠফাটা রোদই স্বাভাবিক। খাল বিল, মাঠ ফেটে চৌচির। চারদিকে পানির জন্য হাহাকার। মাঝে মাঝে বৃষ্টি ঝরে তপ্ত ধরায় আশীর্বাদ নেমে আসে।
যদিও খরতাপের এ মৌসুমে ভোর শুরু হওয়ার কথা সূর্যের ঝলমলে আলোয়।
কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) ভোরে ভিন্ন চিত্র দেখা গেল কুমিল্লা জেলার দক্ষিণ অঞ্চলে। ঘন কুয়াশায় ঢেকে ছিল কুমিল্লা জেলা পুরো দক্ষিণ অঞ্চলের প্রকৃতি। কনকনে শীত ছাড়াই কুয়াশা দেখে অবাক এলাকাবাসী।
ভোর থেকে মাঝারি ও ঘন কুয়াশার কারণে সামান্য দূরের জিনিসও দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল না। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলেছে কুয়াশার রাজত্ব।
কুমিল্লা আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার কুমিল্লায় সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৫টা ৩৭ মিনিটে। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। ভোরে সূর্যোদয়ের পর পরই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় প্রকৃতি। সকাল ৮টার পর প্রকৃতি আবার স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এদিকে দিনের তাপমাত্রা সর্বউচ্চ ৩৮° ও সর্বনিম্ন ২৫° সেলসিয়াস নির্ধারণ করেন।
নাঙ্গলকোট উপজেলার গোমকোট গ্রামের ষাটোর্ধ্ব হাজি জয়নাল আবেদীন বলেন, আজ চৈত্র মাসের শেষদিন, এ রকম কুয়াশা আমরা এ বয়সে আর দেখিনি। এ কুয়াশার লক্ষণে বোঝা যায় অসুখ-বিসুখ বাড়বে এবং অকালেই বন্যা হবে।
আলীয়ারা গ্রামের রেজাউল করিম রাজু বলেন, দিনে যে গরম পড়ে এক মিনিট থাকা যায় না। আবার রাতেও যে গরম পড়ে পাখা বন্ধ হলে পুরো শরীর জ্বালা পোড়া করে ঘুম আসে না। হঠাৎ আজকে রাতে দেখি কুয়াশা পড়তেছে। মনে হয় বৃষ্টি পড়তেছে। আল্লাহ ভালো জানেন।
লাকসাম উপজেলার ফতেপুর গ্রামের এয়াকুব আলী বলেন, গাড়ি নিয়ে চট্টগ্রাম গিয়েছিলাম। সেখানে যাওয়া আসার পথে চৈত্র মাসের কুয়াশার কারণে সময় বেশি লাগছে আর গাড়ি চালানো কঠিন ছিল। আমার জীবনেও এমন কুয়াশা দেখিনি।
নাঙ্গলকোট পৌর সদর ব্লক উপসহকারী কৃষি অফিসার জুনায়েদ হোসেন বলেন, রাতে ঠাণ্ডা আর দিনে গরম এটি ফসল ফলাদির জন্য খারাপ লক্ষণ। আজকে আবার অনেক কুয়াশা। ফলে বোরো ধানে ছত্রাকজনিত রোগের প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পাবে। আম ও লিচু ফল ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই বোরো ধানের জমিতে পানি রাখতে হবে। পাশাপাশি জমিতে ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করতে হবে। আম ও লিচু নিয়মিত পানি দিতে হবে।