মালয়েশিয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন হলেন কুমিল্লার শাওন
মালয়েশিয়ায় বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা থাকার পরও মোহাম্মদ শাওন (৩০) নামের এক বাংলাদেশিকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে।
আজ বুধবার সকালে হাইকমিশনের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, শাওনের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে মিশনের লিগ্যাল অ্যাডভাইজারকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী জানান, মরদেহ দাফনের আগে হাইকমিশনের কল্যাণ সহকারী মুকসেদ আলীর হোয়াটসঅ্যাপে শাওনের সব তথ্য পাঠানো হয়েছিল।
শাওনের মা শিরিন বেগম বলেন, ‘বাংলাদেশ হাইকমিশনে জানানোর পরও কোনো ধরনের সহায়তা করেনি। আমার ছেলের পাসপোর্ট-ভিসা থাকার পরও কেন বেওয়ারিশ হিসেবে মালয়েশিয়ায় দাফন হলো। মা হয়ে ছেলের মরদেহ দেখা হলো না আমার। চার ভাইয়ের মধ্যে শাওন ছিলেন সবার ছোট।’
শাওনের বড় ভাই মোহাম্মদ শামীম বলেন, ‘আমার ভাইয়ের পরিচয় থাকার পরও দেশে না পাঠিয়ে বেওয়ারিশ হিসেবে তাকে দাফন করা হয়েছে। আমি এই ঘটনার সঠিক বিচার দাবি জানাই।’
কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দির গৌরীপুরের হাটচান্দিনা গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ শাওন। ২০১৫ সালে কাজের জন্য মালয়েশিয়া যান তিনি। গত বছরের ২৭ আগস্ট এক চীনা নাগরিকের বাসায় ব্যক্তিগত কাজ করতে গিয়ে ৫ তলা ভবন থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে কুয়ালালামপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। তিন মাস হাসপাতালে থাকার পর গত ৩ মার্চ মারা যান শাওন। গত ১৫ এপ্রিল বেওয়ারিশ মরদেহ হিসেবে দাফন করা হয় শাওনকে।
এদিকে, ব্যক্তিগত কাজে গিয়ে আহত হওয়ায় ওই ঘটনার দায় নেয়নি শাওনের কোম্পানির মালিক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালে ৮১ হাজার ৭৪৩ রিঙ্গিত বিলের মধ্যে ২২ হাজার ইনস্যুরেন্স এবং প্রবাসীদের সহযোগিতায় ৯ হাজার রিঙ্গিতসহ মোট ৩১ হাজার রিঙ্গিত হাসপাতালের বিল পরিশোধ করা হয়।
একটি সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়ার হাসপাতালে কোনো বিদেশি নাগরিকের চিকিৎসা নেওয়ার মৃত্যু হলে হাসপাতালের বকেয়া বিল পরিশোধ না করা পর্যন্ত মরদেহ হস্তান্তর করা হয় না। হাসপাতালের বকেয়া বিল এবং পরিচয় থাকা সত্ত্বেও কেন শাওনের মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হলো—এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন প্রবাসীরা।