৭১ দিনে ৩০ পারা কোরআন মুখস্থ করল ৯ বছরের নাফিস
পবিত্র কোরআনের ৩০ পারা মুখস্থ করে হাফেজ হয়েছে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের ৯ বছর বয়সী আবীর ইসলাম নাফিস। এই বয়সে তার কোরআন মুখস্থ করতে সময় লেগেছে মাত্র ৭১ দিন। নাফিস চলতি বছরের ১ জানুয়ারি হতে হেফজ পড়া শুরু করে। সকাল ও বিকেলে দুজন হুজুরের তত্ত্বাবধানে বাসাতেই পবিত্র কোরআন মুখস্থ করতে থাকে। সর্বশেষ ৭১ দিন পর মার্চের ১১ তারিখে ৩০ পারা কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হয়েছে সে।
আবীর ইসলাম নাফিস টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার নগদা শিমলা ইউনিয়নের উত্তর বিলডগা গ্রামের নজরুল ইসলাম ও নাসিমা আক্তার দম্পতির সন্তান। তাদের ঘরে আরও দুজন ছেলে সন্তান রয়েছে। ভাইদের মধ্যে নাফিস মেঝো। নাফিসের বাবা নজরুল ইসলাম উপজেলার নলীনের নঈম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মা মোছা. নাসিমা আক্তার গোপালপুর দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার ইংরেজি প্রভাষক।
জানা যায়, অত্যন্ত মেধাবী নাফিস ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে জামতৈল দারুল কোরআন মাদ্রাসা থেকে ১৬ দিনে নাজেরা সম্পন্ন করেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে সেখানেই হেফজ পড়া শুরু করে। ১৫ দিন মাদ্রাসায় থেকে পড়াশুনা করায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়।
এরপর বাড়ির একটি কক্ষে বসে পুনরায় হেফজ পড়া শুরু করে নাফিস। জামতৈল দারুল কোরআন মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ মাওলানা জোবায়ের হোসাইন এবং গোপালপুর পৌরসভার বারিধারা জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতী মাসুদুর রহমানের তত্ত্বাবধানে নাফিসদের বাসাতেই শুরু হয় হেফজ পড়া। এতে সকাল ও বিকাল ওই দুইজন হুজুর নাফিসের পড়াশুনার দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১১ মার্চ প্রথম রমজানের দিন ৩০ পারা পবিত্র কুরআন শরীফ মুখস্থ করে হেফজ সম্পন্ন করে নাফিস।
নূরানী মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আবীর ইসলাম নাফিস ২০২৩ সালে নূরানী তা’লীমুল কুরআন বোর্ড চট্টগ্রামের অধীনে ৩য় শ্রেণির পরীক্ষায় সারাদেশের ৬ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭ম স্থানে উত্তীর্ণ হয়। এছাড়া প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির নূরানি বৃত্তি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি প্রাপ্ত।
নাফিসের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ছেলের ইচ্ছেতেই এবং আমরা তাকে সার্বিক সহায়তা করার কারণে অল্পদিনেই হাফেজ হয়েছে। ১৫দিন পর অসুস্থ হওয়ায় বাড়িতে চলে আসে সে। এরপর সুস্থ হওয়ার পর বাড়িতেই দুজন হুজুরের তত্ত্বাবধানে পড়াশুনা শুরু হয়। ৭১ দিনে সে ৩০ পারা কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হয়েছে।