শেখ হাসিনাকে ভারতে চান না অর্ধেকের বেশি ভারতীয়

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকে ভারতেই আছেন তিনি। বাংলাদেশ সরকার একাধিকবার তাকে ফেরত চাইলেও ইতিবাচক কোনো সাড়া মেলেনি দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে। তবে সরকার না চাইলেও সাধারণ মানুষদের মধ্যে শেখ হাসিনাকে নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে সে দেশের জনগণ কী ভাবছেন, তা নিয়ে একটি জরিপ চালিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে। জরিপে ৫০.২ শতাংশ ভারতীয় জানিয়েছেন যে, তারা চান না হাসিনা ভারতে অবস্থান করুক। তাদের মত হলো, তাকে (হাসিনা) বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হোক কিংবা অন্য কোনো দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হোক।

‘মুড অব দ্য ন্যাশন’ শিরোনামের এ জরিপে হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জনগণের মতামত জানতে চাওয়া হয়। জবাবে ২১.১ শতাংশ ভারতীয় জানান, বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো উচিত। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৭১ শতাংশ মানুষও এমনটাই মনে করেন। আর ২৯.১ শতাংশ ভারতীয় মনে করেন, হাসিনাকে বাংলাদেশে না পাঠিয়ে অন্য কোনো দেশে পাঠানো যেতে পারে।

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিনই তিনি পালিয়ে ভারতে যান। এর আগে ছাত্র-জনতাকে ঠেকাতে ব্যাপক দমন-পীড়ন চালায় হাসিনা সরকার। সম্প্রতি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকার ও সেই সময়ের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বৈরাচারী সরকার নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং দল ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে যুক্ত করে মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ করেছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচার মারণাস্ত্র দিয়ে গুলি, গ্রেপ্তার, নির্যাতন, চিকিৎসা পেতে বাধা দেওয়ার মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে সরকার।

সরকারি ও বেসরকারি হিসাবের পাশাপাশি অন্যান্য সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এতে ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়ে থাকতে পারেন। যাদের বেশিরভাগই নিহত হয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবহৃত মারণাস্ত্র ও শটগানের গুলিতে। নিহতের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ শিশু। আহত হয়েছেন হাজারো মানুষ। এছাড়াও ১১ হাজার ৭০০-এর বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব ও পুলিশ।

আরো পড়ুন