‘বড় ভাই আসবেন, তুমি খুশি মনে কিছু দিবা’, ছাত্রদল নেতার চাঁদা দাবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক দোকানি চাঁদা দাবির অভিযোগ তুলেছেন শাখা ছাত্রদলের দুই নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা হলেন ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক ও ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী উল্লাস মাহমুদ এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন। দু’জনই বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্র নন। তারা শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদের ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
শনিবার (৫ জুলাই) চায়ের দোকানি আব্দুল আহাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগপত্রে আহাদ উল্লেখ করেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের আমবাগান সংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চায়ের দোকান চালিয়ে আসছি। কিছুদিন আগে উল্লাস মাহমুদ আমাকে দোকান বন্ধ করতে বলেন। আমি না মানায় আজ দুপুর ১টায় উল্লাস ও সাব্বির দোকানে এসে চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।”
তিনি আরও বলেন, “তারা আমাকে বলেন— ‘তোমাকে আগেও একবার বলা হয়েছিল, আজকে আবার বলতেছি, কিছু টাকাপয়সা দাও। বড় ভাই আসবেন, তাকে দিবা। আমরা বলে দিব। তোমার কোনো সমস্যা হলে আমরা দেখবো। আজ শনিবার, আগামী বুধবারের মধ্যে টাকা দিবা।’ আমি প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ব্যবসা করছি, তাদের কাছে টাকা কেন দেব? এই ঘটনায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি আহাদের দোকানে যাইনি। ক্যাম্পাসে গিয়ে অন্য একটি দোকানে চা খেয়ে ফিরে এসেছি।”
উল্লাস মাহমুদও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন, “আমি ক্যাম্পাসে গিয়েছি, তবে কোনো দোকানে যাইনি। এসব পুরোপুরি মিথ্যা।”
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহেদ আহম্মেদ বলেন, “ঘটনাটি সম্পর্কে আমার জানা নেই। ছাত্রদল করে কেউ এমন করলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছেও ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাবো।”
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, “অফিসে কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। এক দোকানি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন বলে জেনেছি। আজ অফিস টাইম শেষে অভিযোগটি হাতে পেয়েছি। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সোমবার বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ছাত্রসংগঠনগুলোর অনেকেই চাঁদাবাজির অভিযোগকে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন।