গণসমাবেশের দুদিন আগেই কুমিল্লায় বিএনপির লাখো নেতাকর্মী

কুমিল্লায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের এখনো দুইদিন বাকি। এরইমধ্যে সমাবেশস্থলে অবস্থান নিয়েছেন পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। কুমিল্লার ঐতিহাসিক টাউনহল মাঠে আসাদের বেশিরভাগই যুবক। অধিকাংশের কাঁধে ব্যাগ। সেখানে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত হয়ে মিছিল করছেন তারা। থেমে থেমে চলছে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দিনগত মধ্যরাতে সরেজমিন এমন চিত্র দেখা গেছে।

বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, দেশের অন্যান্য বিভাগে বিএনপির গণসমাবেশ সামনে রেখে পরিবহন ধর্মঘট করেছেন মালিক-শ্রমিকরা। কুমিল্লায় বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরেও এমন শঙ্কা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সমাবেশে দুদিন আগেই দলের নেতাকর্মীরা কুমিল্লায় জড়ো হচ্ছেন। পার্শ্ববর্তী জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ আশপাশের জেলা থেকে লক্ষাধিক নেতাকর্মী কুমিল্লা মহানগরীতে এসেছেন।

সমাবেশস্থল ঘুরে দেখা গেছে, রাতে কনকনে শীতে অনেকে চট বিছিয়ে মাঠে শুয়ে আছেন। অনেকে আবার জড়ো হয়ে আড্ডা-গল্পে মেতেছেন। কেউ কেউ দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে সমাবেশস্থলে এসে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন।

আগেই সমাবেশস্থলে হাজির হওয়া নেতাকর্মীরা জাগো নিউজকে জানান, পুলিশি হয়রানি ও পরিবহন ধর্মঘটের আশঙ্কায় তারা আগেভাগে কুমিল্লায় চলে এসেছেন। কাল সকাল নাগাদ আরও নেতাকর্মীরা এসে পৌঁছাবেন।

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার পলাশ জাগো নিউজকে বলেন, গণগ্রেফতার ও হয়রানি এড়াতে বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের উপজেলার প্রায় ৭০০ নেতাকর্মী আজ সমাবেশস্থলে চলে এসেছি। মাঠেই রাত্রিযাপন করবো। সমাবেশ সফল করতে আমরা সর্বত্মক চেষ্টা করবো।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মজনু মিয়া বলেন, ‘সব সমাবেশের আগেই সরকার গাড়ি বন্ধ করে দেয়। তাই আগেই চলে এসেছি। একটা ভয় তো কাজ করেই। কারণ সরকার কখন কী কইরা বসে, বলা তো আর যায় না। তবুও আমরা এখান থেকে সমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত যাচ্ছি না। এখানেই থাকবো, এখানেই খাবো।’

ফেনী থেকে আসা আলমগীর নামে এক বিএনপি নেতা বলেন, ‘কুমিল্লার সমাবেশ সফল হবে। পরিবহন বন্ধ করেও আর কোনো লাভ নেই। বর্তমানে কুমিল্লায় দেড় থেকে দুই লাখ নেতাকর্মী আবস্থান করছেন। আমাদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করায় কুমিল্লা নেতাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’

বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখনো পরিবহন বন্ধের কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। আর বাস বন্ধ করেও লাভ হবে না। নেতাকর্মীরা কুমিল্লায় চলে এসেছেন। বাকিরাও পায়ে হেঁটে হলেও কুমিল্লায় পৌঁছাবেন।’

তবে বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর আসছে, নেতাকর্মীদের পথে পথে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বর্মমানে যারা কুমিল্লায় আবস্থান করছেন তাদের জন্য জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

আরো পড়ুন