কুমিল্লায় আমন ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লায় এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এ বছর প্রাকৃতিক পরিবেশসহ সবই কৃষকের অনূকুলে থাকায় গত বছরের চাইতে ফলনও ভাল হয়েছে। যার ফলে এবার কুমিল্লায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন জেলা কৃষি অধিদপ্তর।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেশ কয়টি এলাকায় কৃষকরা পাকা ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিছু স্থানে ইতোমধ্যে কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। আবার অনেকে কুলা ও ফ্যান দিয়ে ধান পরিষ্কারের কাজ করতে দেখা গেছে। আবহমান বাংলার কৃষকদের ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসব।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লা অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর কুমিল্লায় রোপা আমনের টার্গেট ছিল ১ লক্ষ ৭ হাজার ২২২ হেক্টর জমিতে। টার্গেট ছাড়িয়ে চাষাবাদ হয়েছে ১ লক্ষ ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। পুরো জেলায় লক্ষ্যমাত্রা হলো ২ লক্ষ ৯০ হাজার ১৯৮ মেট্টিক টন। প্রতি ২.৫ একর জমিতে জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে হাইব্রিড প্রজাতির ৩.৫ মেট্টিক টন, উপসী প্রজাতির ২.৮৫ মেট্টিক টন এবং স্থানীয় প্রজাতির ১.৬৮ মেট্টিক টন। উৎপাদন ভাল হওয়ায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক দিলিপ কুমার অধিকারী জানিয়েছেন।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগের তুলনায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এবারে তারা ধান ক্ষেতে অতিরিক্ত পার্সিং করায় কম খরচে ধানের ভাল ফলন ঘরে তুলতে পারবেন। পাশাপাশি এ পদ্ধতি অনুসরণ করায় পোকা মাকড় দমনে কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন না হওয়ায় তেমন বাড়তি খরচ হয়নি। এতে কৃষকের যেমনি টাকা সাশ্রয় হয়েছে তেমনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় কৃষকরা এবার বেশী ধান হাসিমুখে ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন।

জেলার চৌদ্দগ্রামে ভুলকরা গ্রামের হোসাইন মামুন নামে এক কৃষক জানান, এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর সঠিক দিক নির্দেশনায় গতবারের তুলনায় ফলন দিগুন হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক দিলিপ কুমার অধিকারী আরও জানান, কৃষকরা জমিতে পার্সিং, আলোক ফাঁদ পদ্ধতি গ্রহণ করে এবং জৈবিক সার প্রয়োগ করায় ফলন বেশী হয়েছে। কৃষি উদ্ভাবনীয় আধুনিক পদ্ধতিতে একদিকে যেমন কৃষকরা লাভবান হয়েছেন। অন্যদিকে বিষ প্রয়োগ না করায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হয়েছে। তাছাড়া কৃষি উপকরণ সহজলভ্য হওয়ায় ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী মৌসুম থেকে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষের মাধ্যমে ফলন আরো বেশী বৃদ্ধি করা যেতে পারে বলে তিনি জানান।

দিলিপ কুমার অধিকারী আরো জানান, আগামীতে কৃষকদের মাঝে আরো বেশী আলোক ফাঁদ, পার্সিং, লাইনিংসহ বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতি অনুসরণ নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এতে করে কৃষকরা যেমন লাববান হবেন, জাতীয় লক্ষ্যমাত্রও পুরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশা করেন।

সূত্রঃ পরিবর্তন ডটকম

আরো পড়ুন