নার্সারি বদলে দিয়েছে কুমিল্লার পাবেলের জীবন

করোনায় বেকার হয়ে পড়েন। গড়ে তোলেন ভিক্টোরিয়া এগ্রো এন্ড নার্সারি। ২৭০ টি গাছ দিয়ে শুরু করা বাগানে এখন রয়েছে ১৩৫ জাতের প্রায় আড়াই হাজার গাছ। সংগ্রহে রয়েছে ব্যতিক্রম কিছু ফল ও কাঠ গাছ।

১৫ হাজার টাকা দিয়ে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করে ১৬ মাসে ১৫ লক্ষ টাকার মালিক। বড় বাগান তৈরি করে খ্যাতি অর্জন করেছেন ভিক্টোরিয়া কলেজ ও সেনাবাহিনীর আঙ্গিনায়।

সূত্রমতে, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যাত্রা শুরু করে ভিক্টোরিয়া এগ্রো এন্ড নার্সারি। কিছু পেয়ারা, সুপারি, বড়ুই, লেবু, মাল্টা, কমলার চারা দিয়ে নার্সারি শুরু হয়। বর্তমানে ১৩৫ জাতের দেশি বিদেশি আড়াই হাজার ফলের চারা রয়েছে। হরিমন ৯৯ আপেল,ন্যাসপাতি,মালেশিয়ান এব্যকেটু,থাই ডুড়িয়ান,পারসিমন,রাম্বুটান ,ত্বীনফল,মালেশিয়ান ব্লাক বেরি, অস্টেলিয়ান চেরি,ভিয়েতনাম লাল কাঁঠাল, শে^ত চন্দন,আগর,থাই লঙ্গান,রুবি,লঙ্গান,ভিয়েতনাম পিং কাঁঠাল, ভিয়েতনাম নারিকেল এ নার্সারির ব্যতিক্রম সংগ্রহ। বিক্রির শীর্ষে রয়েছে হাইব্রিড খাটো জাতের সুপারি, মায়ানমার সুপারি,থাই লাল শরিফা,থাই ড্রাগন,থাই পেয়ারাসহ ১৩৫ জাতের গাছ।

ভিক্টোরিয়া এগ্রো এন্ড নার্সারির স্বত্বাধিকারী মো. মাঈন উদ্দীন পাবেল বলেন, করোনার প্রথম ঢেউ এ কর্মহীন হয়ে পড়ি। কিছু দিন অনলাইনে পণ্য বিক্রি করেছি। পরে কাজী আপন তিবরানী ম্যাডামের পরামর্শে ভিক্টোরিয়া এগ্রো এন্ড নার্সারি নামে ফেসবুক পেজ খুলে ব্যবসা শুরু করি। প্রথমে ম্যাডামের গ্রুপে পোস্ট করতাম। শুধু অনলাইন ক্রেতাদের নিয়ে কাজ ছিলো। এখন অনলাইন থেকে অফলাইনে ক্রেতা বেশি। ফুল, ফল, বৃক্ষেরর পাশাপাশি জৈব সার,রেডিমিস্ক সার নিয়ে কাজ করি। বাসা, বাড়ি ও অফিসে বাগান চুক্তিভিত্তিক তৈরি করে থাকি। বাসা-বাড়ি, বাড়ির ছাদ, ভিক্টোরিয়া কলেজ ডিগ্রি শাখার বাগানের কাজ করেছি ও কুমিল্লা সেনানিবাসের বাগানের কাজ চলমান আছে। এ বিষয়ে আমি সরকরি ভাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি।

ই-কমার্স গ্রুপ ভিক্টোরিয়া ই-কমার্স (ভিই) ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা কাজী আপন তিবরানী বলেন, ভিই গ্রুপ প্রতিষ্ঠার পরপরই পাবেল অন্যান্য পণ্যসহ নার্সারি আইটেম নিয়ে কাজ শুরু করে। তার আগ্রহ দেখে আমি বললাম তুমি সবুজকে নিয়ে থাকো। ভিক্টোরিয়া এগ্রো এন্ড নার্সারির লগোর সাথে যুক্ত হলো প্রতি নিঃশ্বাসেই ফ্রেশ আক্সিজেন কথাটি। ইতোমধ্যে সে ভালো কিছু কাজ করেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে তার আর পিছে ফিরে তাকাতে হবে না। ইতোমধ্যে সে ৭/৮জন মানুষের কর্মের ব্যবস্থা করেছে।

ভিক্টোরিয়া কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা পড়ার পাশাপাশি কর্মের দিকে ঝুঁকছে, সেটা আমাদের জন্য আনন্দের। সনদ অর্জনের পর আর বেকার বসে থাকতে হবে না। তারাই কর্মসংস্থান তৈরি করে দিবে। আমাদের ছাত্ররা এখানে যে বাগান করেছে, তা খুবই সুন্দর হয়েছে।

হর্টিকালচার সেন্টার কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. আমজাদ হোসেন বলেন, অনেক তরুণ উদ্যোক্তা আছেন। যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন, হয়তো আমাদের সাথে যোগাযোগ নেই। তবে তারা ভালো কাজ করেন। তাদের জন্য সরকরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও বীজ, চারা সংগ্রহসহ যে কোন বিষয়ে আমরা পরামর্শ ও সহযোগীতা করে থাকি।

আরো পড়ুন