ফাইনালে কুমিল্লার সঙ্গী হবে কে?

ফাইনালে কুমিল্লার সঙ্গী হবে কে? মাশরাফির সিলেট স্ট্রাইকার্স? না নুরুল হাসান সোহানের রংপর রাইডার্স? আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতেই মিলবে এ প্রশ্নর উত্তর। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কোয়ালিফায়ার-২ তে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিতের লড়াইয়ে মুখোমুখি সিলেট ও রংপুর।

এই লড়াইয়ে মুখোমুখি হতে দুই দল এসেছে ভিন্ন অবস্থা থেকে। রাউন্ড রবিন লিগে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা সিলেট স্ট্রাইকার্স কোয়ালিফায়ার-২ এ খেলবে কোয়ালিফায়ার-১ এ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে ৪ উইকেটে হেরে। আর রংপুর রাইডার্স উঠে এসেছে এলিমিনেটর পর্বে সাকিবের ফরচুন বরিশালকে ৪ উইকেটে হারিয়ে।

পুরো টুর্নামেন্টে দারুন টিম ওয়ার্ক ও টিম পারফরমেন্স দেখিয়ে কুমিল্লার সমান ৯ খেলায় জিতলেও কোয়ালিফায়ার-১ এ কুমিল্লার বিপক্ষে আর কুলিয়ে উঠতে পারেনি মাশরাফির সিলেট। রাউন্ড রবিন লিগে দু’দলের জয় পরাজয়ের পাল্লা সমান ছিল। কিন্তু প্লে-অফ পর্বে কুমিল্লা আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালি লাইন আপ মাঠে নামানোয় সিলেটের হিসেবটা কঠিন হয়ে পড়ে।

জাতীয় দলের ওপেনার ব্যাটার লিটন দাস, সীমিত ওভারের ফরম্যাটে টাইগারদের প্রধান বোলিং নির্ভরতা মোস্তাফিজ আর দুই উঠতি ও সম্ভাবনাময় তরুণ মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ এবং তানভির ইসলামের নৈপুণ্যর সাথে টি-টোয়েন্টির তিন শীর্ষ তারকা আন্দ্রে রাসেল, সুনিল নারিন এবং মঈন আলী যোগ দেয়ায় কাগজে কলমে কুমিল্লা এখন অনেক বেশি সমৃদ্ধ ও শক্তিশালি।

কাজেই কুমিল্লার সঙ্গে এখন যে কোনো দলের শক্তিতে পেরে ওঠা কঠিন। তাই সিলেটও পেরে ওঠেনি। মাত্র ১২৫ রানে আটকে গেছে মাশরাফির দল। যে তিন তরুণ ব্যাটার পুরো আসরে সিলেটকে টেনে নিয়ে গেছেন, সেই তৌহিদ হৃদয়, নাজমুল হোসেন শান্ত আর জাকির হাসান কিছু করতে পারেননি। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমও ব্যাট এবং কিপিংয়েও নিজের করণীয় কাজ ঠিকমত করতে পারেননি। একটি নিশ্চিত স্টাম্পিংয়ের সুযোগ হাতছাড়া করার পাশাপাশি দুটি ভাইটাল ক্যাচ পড়েছে তার গ্লাভস থেকে।

কিপার মুশফিক ওই তিনটি আউটের সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে কি হতো বলা মুস্কিল। কোয়ালিফায়ার-২ এ রংপুর রাইডার্সের সাথে জিততে তিনটি ডিপার্টমেন্টের জ্বলে ওঠা খুব জরুরি। এক টপ অর্ডারে তিন তরুণ তৌহিদ হৃদয়, জাকির হাসান আর নাজমুল হোসেন শান্তর মধ্যে অন্তত দু’জনের জ্বলে ওঠা, সাথে মুশফিকের ব্যাট ও গ্লাভস হাতে কার্যকর নৈপুণ্যটাও খুব বেশি দরকার সিলেটের।

পাশাপাশি ইমাদ ওয়াসিম ও মোহাম্মদ আমিরের অভাব মেটানো পারফরমেন্সটাও খুব দরকার। দক্ষিণ আফ্রিকর জর্জ লিন্ডে আর লঙ্কান ইসুরু উদানা কি তা পারবেন?

ওদিকে পাকিস্তানিরা পিএসএলে চলে যাওয়ার পর মুজিবুর রহমান, ডোয়াইন ব্রাভো, দাসুন সানাকা এবং নিকোলাস পুরানের অন্তর্ভুক্তি বদলে দিয়েছে রংপুর রাইডার্সকে। শোয়েব মালিক, হারিস রউফরা চলে যাওয়ার পরও ওই ৪ জনের অন্তর্ভুক্তিতে রংপুরের শক্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। তাই এলিমিনেটর পর্বে সাকিবের বরিশাল কুলিয়ে উঠতে পারেনি সোহানের দলের সাথে।

আজ কোয়ালিফায়ারে-২ এ দু’দলের পার্থক্য চিহ্নিত করতে গেলে রংপুরের ৪ নতুন ফরেন রিক্রুটের কথাই চলে আসছে সবার আগে। আফগান ‘স্পিন মিস্ট্রি’ মুজিব, ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভো, মিডল অর্ডার নিকোলাস পুরান আর লঙ্কান দাসুন সানাকারা দলে আসায় কুমিল্লার মত এত সমৃদ্ধ আর বেশি শক্তিশালি না হলেও রংপুরও এখন কঠিন প্রতিপক্ষ।

কাগজে কলমে তাই মঙ্গলবার ফাইনাল নিশ্চিতের ম্যাচে ফেবারিট রংপুর। এখন দেখা যাক মাশরাফি ম্যাজিক আর তরুণরা মিলে সিলেটকে টেনে তুলতে পারেন কি না?

আরো পড়ুন