কুমিল্লায় উদ্ধার হওয়া সেই মেয়েটির পরিচয় মিলেছে
ডেস্ক রিপোর্টঃ পারিবারিক কলহের জের ধরে অভিমানে বাড়ি ছেড়ে আসা এক তরুণীকে কুমিল্লা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম নাজিয়া আক্তার। তিনি নোয়াখালী জেলার বসুর হাট উপজেলার চরপাচুরিয়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী নূরে আলম মানিকের মেয়ে এবং বসুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী।
পারিবারিক কলহের জের ধরে অভিমানে বাড়ি ছেড়ে আসা এক তরুণীকে কুমিল্লা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম নাজিয়া আক্তার। তিনি নোয়াখালী জেলার বসুর হাট উপজেলার চরপাচুরিয়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী নূরে আলম মানিকের মেয়ে এবং বসুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী।
আগে রোববার দুপুরে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা ইউনিয়নের ধনাজুর গ্রামে রাস্তার পাশ থেকে অজ্ঞান অস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও থানা পুলিশের সহায়তায় ‘অজ্ঞাত’ ওই তরুণীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮টায় জ্ঞান ফিরে তার।
রোববার রাত সাড়ে ১০টায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মহিলা ওয়ার্ডে গিয়ে কথা হয় নাজিয়ার সাথে। পরিবর্তন ডটকমকে তিনি জানান তার বাড়িছাড়ার আদ্যোপান্ত।
তার সাথে কথা বলে জানা যায়, নোয়াখালীর চরপাচুরিয়া গ্রামের প্রবাসী নূরে আলমের ২ মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে নাজিয়া সবার ছোট। বাবার অনুপস্থিতিতে তার মায়ের সাথে অন্য ভাই-বোনদের বাক-বিতণ্ডা লেগেই থাকে। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা এ পারিবারিক কলহের কারণে একটা সময় এসে মানসিকভাবে কিছুটা ‘বিপর্যস্ত’ হয়ে পড়েন নাজিয়া।
এরই জের ধরে রোববার ভোরে ফজরের নামাজ আদায়ের পর বাড়ি ছেড়ে ‘অজানার’ উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয় দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া নাজিয়া। কখনো গাড়িতে, কখনো পায়ে হেঁটে ক্লান্ত-শ্রান্ত নাজিয়া হঠাৎ কখন কোথায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায় তা আর মনে করতে পারেননি। এরপর রোববার রাত ৮টায় হাতে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় নিজেকে আবিষ্কার করেন তিনি। এরপরই শুরু করে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না…।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ার ইউনিয়নের ধনাজুর গ্রামে রাস্তার পাশে এক অজ্ঞাত তরুণীকে পড়ে থাকতে দেখেন পথচারীরা। ওই তরুণীকে দেখে সেখানে ভিড় জমাতে থাকে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে আসেন ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য আঞ্জুমান আরা। তাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে সদর দক্ষিণ থানা পুলিশ। উদ্ধার করে মেয়েটিকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতালের ৯নম্বর মহিলা ওয়ার্ডে এখনো চিকিৎসা চলছে তার।
রাতে জ্ঞান ফেরার পর নাজিয়ার কাছ থেকে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে কথা হয় তার মায়ের সাথে।
তিনি বলেন, ‘তার (নাজিয়া) মাথায় সমস্যায় আছে, পড়ালেখার জন্য চাপ দেয়ায় বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।’
‘হাসপাতাল থেকে ফোন করা হয়েছে, আমরা কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি-’ বলেই লাইন কেটে দেন নাজিয়ার মা ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উর রশিদ বলেন, ‘দুপুরে মেয়েটি অজ্ঞান অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে কুমেক হাসপাতালে ভর্তি করেছে। শুনেছি নোয়াখালী থেকে তার পরিবারের লোকজন কুমিল্লায় আসছে।’
সূত্রঃ পরিবর্তন