সংঘর্ষের ঘটনায় কুমিল্লার দেবীদ্বারের তাজু চেয়ারম্যান গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কক্সবাজার যাওয়ার পথে ‘ঢাকা-চট্রগ্রাম মহা সড়কের’ ইটাখোলা নামক স্থানে স্বাগত জানাতে আসা বিএনপি’র নেতাকর্মীদের সাথে যুবলীগ ও সেচ্চাসেবকলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা বিএনপির ৩৩জন নামে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৭০/৮০জন সহ মোট ১১৩ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার রাতে দেবীদ্বার উপজেলার ভানী ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও একই ইউনিয়ন পরিষদ’র সদস্য, আসাদনগর গ্রামের আব্দুল আউয়াল মাষ্টার’র প্রত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন(বাদী হয়ে ওই মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং-২৩/৩১০, তারিখ- ৩০/১০/১৭ইং।)
মামলা দায়ের’র পর রাতেই বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি ঘরে পুলিশি অভিযান শুরু করেছে থানা পুলিশ এবং উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রাজামেহার ইউনিয়ন পরিষদ’র সাবেক চেয়ারম্যান হাজী মোঃ মনিরুল ইসলাম (তাজু) সরকারকে আটক করে মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লা কোর্ট হাজতে চালান করেছে। জানা যায়, গত শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কক্সবাজার যাওয়ার পথে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের ইটাখোলা এলাকায় স্বাগত জানাতে আসা বিএনপি’র নেতাকর্মীদের সাথে যুবলীগ ও সেচ্চাসেবকলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলার ভানী ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন মেম্বার বাদী হয়ে সোমবার রাতে দেবীদ্বার উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মনিরুল ইসলাম তাজু, সাধারন সম্পাদক মোঃ গিয়াস উদ্দিন, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মিজানুর রহমান, উপজেলা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক রবিউল আউয়াল (সাইফুল), ফতেহাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি ও ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ রুহুল আমিন সহ ৩৩ জন আসামীর নাম উল্লেখ্য পূর্বক এবং আরো ৭০/৮০ জন নেতা-কর্মীকে অজ্ঞাত আসামী করে ১১৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় এ মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং-২৩/৩১০, তাং-৩০/১০/১৭ইং।)
মামলায় উল্লেখ্য করা হয়,- উপজেলার ভানী ইউনিয়নের যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন ও কুমিল্লা উত্তর জেলা হকার্স লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক গাজী মোঃ আবদুল জলিল মটরসাইকেল যোগে উপজেলার রাজামেহার যাওয়ার পথে ইটাখলা নামক স্থানে পৌছলে বিবাদীগন তাদের উপর হামলা চালিয়ে তাদের আহত করেন এবং তাদের ব্যবহৃত দুইটি মটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।
মামলায় নামে উল্লেখ অভিযুক্তরা হলেন,উপজেলার রাজামেহার গ্রামের ফজলু মেম্বারের ছেলে মোঃ কামাল(৩৫), মোকশত আলীর পুত্র মনিরুল ইসলাম তাজু(৫০), আব্দুর রশীদ ভূঞার পুত্র কামাল হোসেন ভূঞা(৩৫), হানিফ মাষ্টার’র ছেলে আঃ রৌফ খান(৫০), আঃ মতিন’র ছেলে আশিক(২৭), আলম সরকার’র পুত্র আল-আমিন(২৫), আঃ লতিফ বদল’র পুত্র মোঃ জাকির হোসেন বদল(৩৫), বড়আলমপুর গ্রামের মৃত: আঃ আজিজ’র পুত্র রবিউল আউয়াল সাইফুল(৩০), ছোট আলমপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেন’র পুত্র বিল্লাল হোসেন বিল্লু(২৪), মৃত: ফরিদ উদ্দিনের পুত্র মিজানুর রহমান((৪৮), চুলাহাশ গ্রামের ওসমান গণীর পুত্র মোঃ আব্দুল(২৪), রুহুল আমিন’র পুত্র আল আমিন((২৩), নুরুল ইসলাম’র পুত্র সুমন(২০), কাসেম আলীর পুত্র কবির হোসেন(২২), পিতা অজ্ঞাত: মোঃ আব্দুল্লাহ(৩০), বক্রিকান্দি গ্রামের আলী মিয়ার পুত্র মোঃ রফিকুল ইসলাম(৪২), আব্দুর রহিম ভূঞার পুত্র মোঃ মমিন মিয়া(৩৬), সুলতানপুর গ্রামের আব্দি মিয়া মেম্বার’র পুত্র আবুল কালাম(৪৫), আলম সরকার’র পুত্র আল আনি(২৫), উখীয়া গ্রামের রহমান ভূইয়ার পুত্র খোকন ভূইয়া(৪৫), জাফরগঞ্জ গ্রামের লাল মিয়ার পুত্র বাবুল(৪৫), পশ্চিম পাড়ার আঃ খালেক’র পুত্র ইদ্রিস(৩৫), হোসেনপুর গ্রামের আলী আকবর’র পুত্র অলিউল্লাহ(২৮), ভাণী গ্রামের মাওলানা রুহুল কুদ্দুস’র পুত্র মাসুম বিল্লাহ(৩৬), মৃত: আবু তাহের’র পুত্র সুমন হাজারী(২৮), ফতেহাবাদ গ্রামের আ: ছোবানের পুত্র আমির হোসেন(৩৯), আশানপুর গ্রামের অহিদ মিয়ার পুত্র সালাউদ্দিন রুহুল(৩৯), চানপুর গ্রামের মঞ্জুর আলীর পুত্র কামাল হোসেন (৪৮) ও আনিস(৩৩), রোক উদ্দিন’র পুত্র গিয়াস উদ্দিন(৪৫), আসাদনগর গ্রামের মৃত: ছিদ্দিকুর রহমান’র পুত্র শিশির(২৮), রমিজ উদ্দিনের পুত্র ফারুক আহমেদ(৩৫), আ: হক’র পুত্র ফয়েজ উল্লাহ(৪০) সহ ৩৩ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৭০/৮০ জন সহ ১১৩জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলার বাদী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ঘটনার দিন আমরা রাজামেহার যাওয়ার পথে ঘটনাস্থলে পৌছলে বিবাদীগন আমাদের উপর হামলা চালিয়ে আমাদের আহত করে এবং দুইটি মটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। আমি হাসপাতালে ভর্তি থাকায় মামলা দায়ের করতে বিলম্ব হয়।
বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কুমিল্লা-৪ দেবীদ্বার নির্বাচনী এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জরুল আহসাম মুন্সী জানান, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কক্সবাজার যাওয়ার পথে স্বাগত জানাতে আসা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর পুলিশের সহযোগিতায় যুবলীগ, সেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় এবং এনামুল, রহমান সহ আমাদের ১৪/১৫জন নেতাকর্মীকে আহত করে। ওই সময় তারা আমাদের নেতাকর্মীদের প্রায় ৭/৮টি মটরসাইকেল ভাংচুর করে। আমাদের জনরোষ দেখে ঈষান্বীত হয়ে এখন মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।