প্রেমের টানে ভারতে গিয়ে লাশ হলেন কুমিল্লার সুমি
ডেস্ক রিপোর্টঃ মোবাইল ফোনে পরিচয়ের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন কুমিল্লার সুমি আক্তার। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের এক পর্যায়ে পরিবার ও স্বজনদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে করেন নাজমুল হাসান নামের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের এক যুবককে।
বিয়ের মাস শেষ হতে না হতেই লাশ হয়ে দেশে ফিরতে হল সুমিকে। রবিবার কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকার আন্তর্জাতিক সীমারেখায় শশীদল বিওপির বিজিবি ও ভারতের আশাবাড়ী বিএসএফ‘র পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ব্রাহ্মণপাড়া ও ভারতের কলমচুড়া থানা পুলিশের উপস্থিতিতে সুমির লাশ বিজিবির নিকট হস্তান্তর করে বিএসএফ।
বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী আশাবাড়ীর এলাকার লোকজন ও সুমির স্বজনরা জানান, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কলমচুড়া থানার রহিমপুর গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে নাজমুল হাসান। আর কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার সুজানগর এলাকার মৃত ইদ্রিস মিয়ার মেয়ে সুমি আক্তার (২২)। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সম্পর্কে জড়িয়ে গত এক মাস আগে পারিবারিক ইচ্ছার বিরুদ্ধে পালিয়ে গিয়ে নাজমুলকে বিয়ে করে সুমি। বিয়ের এক সপ্তাহ পরে নাজমুল সুমিকে যৌতুকের জন্য মারধর ও যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এক পর্যায়ে সুমি স্বামী সংসারের সুখের কথা ভেবে স্বজনদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে স্বামী নাজমুল হাসানকে দেয়। তারপরও সুমির স্বামী নাজমুল আরো যৌতুকের জন্য সুমির উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। গতকাল শনিবার বিকেলে সুমি স্বামীর সাথে ঝগড়া করে আশাবাড়ী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর তার স্বামী ও তার মামা শ্বশুর আব্দুল জলিল বাংলাদেশের সীমানা থেকে সুমিকে ধরে নিয়ে ভারতের সীমানায় বেদম মারধর করে।
পরে বস্তাবন্দী করে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে বাংলাদেশের সীমানায় ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ‘র দৃষ্টিগোচর হয়। এসময় ভারতের সীমান্ত প্রতিরক্ষা বাহিনীর (বিএসএফ) উপস্থিতি টের পেয়ে স্বামী নাজমুল ও মামা শ্বশুর আব্দুল জলিল পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে বিএসএফ সুমিকে উদ্ধার করে ভারতের বক্সনগর সরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পথে সুমি মারা যায়। পরে তার লাশ ভারতে ময়নাতদন্ত করে। স্থানীয় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দিয়ে সুমির লাশ রবিবার বাংলাদেশে হস্তান্তর করে।
এসময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ৬০ ব্যাটালিয়ন বিজিবির নন কমিশনার অফিসার মেহেদী হাসান, শশীদল বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার নায়েব সুবেদার টিপু সুলতান, ব্রাহ্মণপাড়া থানার এস আই সুনীল। অপরদিকে ভারতের আশাবাড়ী বিএসএফ ক্যাম্প কমান্ডার এস কে মিতু ও কলমচুড়া থানা পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে শশীদল বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার নায়েব সুবেদার টিপু সুলতান সত্যতা স্বীকার করে জানান, ময়নাতদন্তের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফ আমাদের নিকট লাশ হস্তান্তর করে। পরে আমরা একই দিনে সুমির লাশ তার স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করি।
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন