ইসলামী ব্যাংক থেকে সরে দাঁড়ালো সৌদি কোম্পানি
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরবের কোম্পানি আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিস্ট এজেন্সি। তবে কোম্পানিটি এখনো তাদের শেয়ার বিক্রি করেনি। আরবসাস ট্রাভেল ইসলামী ব্যাংকের ৯.৯৯% শেয়ারের মালিক।
গত ৫ জুলাই এক চিঠিতে আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিস্ট এজেন্সি জানায়, তারা ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পদে থাকবে না। বিষয়টি এ সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে চিঠিতে জানায় ইসলামী ব্যাংক।
আরবসাস ট্রাভেলের চিঠি পাওয়ার পর ২৬ জুলাই ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় কোম্পানিটির সিদ্ধান্তকে অনুমোদন দেওয়া হয়। আরবসাসের পক্ষে মুসাইদ আবদুল্লাহ এ আল-রাজি দীর্ঘদিন ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তবে এ বিষয়ে ব্যাংকটির পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু জানা সম্ভব হয়নি।
এর আগে সরকারি প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ইসলামী ব্যাংকের পুরো শেয়ার ছেড়ে দিয়ে পরিচালনা পর্ষদ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। তারও আগে বেশ কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠান ব্যাংকটির শেয়ার বিক্রি করে দেয়। চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এই শেয়ার বিক্রি শুরু হয়। ২০১৭ সালে ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ।
গত জুনে ব্যাংকটির পরিচালনা থেকে সরে দাঁড়ায় আরমাডা স্পিনিং মিলস, কিংসওয়ে এনডেভার্স এবং ইউনিগ্লোব বিজনেস রিসোর্সেস। ব্যাংকটিতে এসব কোম্পানির মোট শেয়ার ১১%। গত জুনে ব্যাংকের পর্ষদে এই তিন কোম্পানির মনোনীত পরিচালক ছিলেন অধ্যাপক নাজমুল হাসান, অধ্যাপক সেলিম উদ্দিন ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবদুল মতিন।
গত জুনেই এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলমকে জেএমসি বিল্ডার্সের মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ২০১১ সাল পর্যন্ত একরকম নির্বিঘ্নেই ব্যাংকটি পরিচালনা করেছে। ২০১১ সালের নভেম্বরে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি নতুন নিয়ম করে, তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে পরিচালক হতে হলে ওই পরিচালকের হাতে কোম্পানিটির ন্যূনতম ২% শেয়ার থাকতে হবে। এই বিধান করার পর ব্যাংকটিতে জামায়াত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র আধিপত্যে কিছুটা ভাটা পড়ে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, নানা অনিয়মের কারণে ইসলামী ব্যাংকটি এখন তারল্য সংকটে ভুগছে। এ অবস্থায় ব্যাংকটির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে টাকা ধার দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।