কুমিল্লায় পিএসসি পরীক্ষা না দিয়েও পাশ করলো চার পরীক্ষার্থী
বিশেষ প্রতিনিধিঃ পরীক্ষা না দিয়েও পিএসসি পরীক্ষায় পাশ। এ যেন তেলেসমাতি কোন ঘটনা। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের চার পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও পাশ করার এমন ফলাফলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে গোটা এলাকায়। ডেইলি কুমিল্লা নিউজকে খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা নাসরিন।
এদিকে পরীক্ষা না দিয়েও ফলাফলে পাশ করা শিক্ষার্থীদের তালিকায় পরীক্ষায় অনুপস্থিত চার শিক্ষার্থীর ফলাফল দেখে হতবাক খোদ স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা।
ডেইলি কুমিল্লা নিউজের অনুসন্ধানে জানা যায় পাশ করা চার শিক্ষার্থী, জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের বেতিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র এবায়দুল হোসেন (রোল-৭৬৮২ ) পেয়েছে জিপিএ-৩.৫৮ যার মোট নম্বর ৩৭৮।
মুন্সিরহাট ইউনিয়নের মুন্সিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী মোসাঃ সাথি আক্তার (রোল-৪৪৭০) পেয়েছে জিপিএ-২.৫০ যার মোট নম্বর ৩০৫।
আলকরা ইউনিয়নের পদুয়া দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী আয়শা আক্তার (রোল-৮১৮৯) পেয়েছে জিপিএ-২.৩৩ যার মোট নম্বর ২৯০।
নুসরাত জাহান (রোল-৮১৯০) পেয়েছে জিপিএ-২.২৫ যার মোট নম্বর ২৯৩।
জানা গেছে, গত শনিবার সারাদেশে একযোগে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ২০১৭ এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এরমধ্যে চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারা, মুন্সিরহাট ও পদুয়া দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী পরীক্ষা না দিয়েও পাশ করায় শিক্ষকরা হতবম্ব হয়ে পড়েন। আশ্চার্যান্বিত হন চার শিক্ষার্থীরা পিতা-মাতাও। পুরো এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বেতিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হামিদা খাতুন চৌধুরী বলেন, এবায়দুল অনিয়মিত ছিল। সে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেনি সেটা আমরা জানি। এবং সে এখন ৫ম শ্রেণীতে আবার ক্লাস শুরু করে। তার ফলাফলের খবরটি ‘মিরাকল’। আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি।
মুন্সিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান ডেইলি কুমিল্লা নিউজকে বলেন, সাথী আক্তার অসুস্থতার জন্য পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি তবে তার পাশের খবর এসেছে। ফলাফল প্রকাশের আগের দিন তার অভিভাবক তাকে ৫ম শ্রেণীতে ক্লাস করার অনুমতি নিয়ে যায়। তবে আশ্চর্যজনক খবরটি হল পিএসসিতে তার পাশ করার ফলাফল এসেছে।
এদিকে ভুল ফলাফলে পাশ দেখানোর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। এনামুল হক নামে একজন অভিভাবক বলেন, যদি পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে ভাল ফলাফল আসে আর সেটা যদি সিস্টেমের ত্রুটি হয়, তাহলে ভাল ছাত্র/ছাত্রীর খারাপ হল হলে সেটাতো আমাদের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরী করছে, আসলে কি সিস্টেমের ত্রুটি নাকি কোন অনিয়ম।
এদিকে মিথ্যা তথ্যে ভাগ্য খুলেছে এবাদুল, আয়শা, নুসরাত ও সাথি আক্তারের- এমন মন্তব্য এখন স্থানীয় সাধারন মানুষের।
এ ব্যাপারে স্বীকার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা নাসরিন ডেইলি কুমিল্লা নিউজকে বলেন, ঘটনাটি সত্যি। খবরটি পেয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ভুল সংশোধনের চেষ্টা চলছে।
অপরদিকে কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নুরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।