উপাচার্যশূন্য কুবি, আটকে আছে ১৩ টি সেমিস্টার ফাইনাল
শাহাদাত বিপ্লবঃ প্রায় দেড় মাস ধরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদ শূন্য থাকায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগের ১৩টি সেমিস্টার ফাইনাল আটকে আছে। ফলাফল আটকে আছে ৮টি সেমিস্টারের চুড়ান্ত পরীক্ষার। এতে বাড়ছে সেশনজটের আশংকা। এছাড়াও নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা না হওয়ায় উদ্বেগে রয়েছেন ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী এবং তাদের অবিভাবকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপাচার্যের অনুমোদনের অপেক্ষায় বিভিন্ন বিভাগের মোট ১৩ টি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে আটকে আছে। এর মাঝে স্নাতকোত্তরের ২ টি এবং বাকি ১১ টি স্নাতক পরীক্ষা। এছাড়াও স্নাতক চুড়ান্ত পরীক্ষার ২ টি ফলাফল সহ মোট ৮ টি ফলাফল আটকে আছে। এতে করে ভয়াবহ সেশনজটের আশংকা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গণিত চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম রুপক বলেন, “এমনিতেই সেশনজট আছে আমাদের। তার উপর এখন আবার পরীক্ষা দিতে পারছিনা। সরকারের কাছে আবেদন যেন দ্রুত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী বিগত সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশ না করে পরবর্তী পরীক্ষা নেয়া যায়না। পরীক্ষা এবং ফলাফল দুটোতেই প্রয়োজন হয় উপাচার্যের অনুমোদনের। এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নূরুল করীম চৌধুরী বলেন, “বিভিন্ন বিভাগের ১৩টি সেমিস্টারের চুড়ান্ত পরীক্ষা এবং ৮টি ফলাফল উপাচার্যের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।”
এছাড়াও উপাচার্য না থাকায় ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক(সম্মান) শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষা এখনো অনুষ্ঠিত হয়নি। এ নিয়ে চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছু ৫৪ হাজার ৮০৯ জন আবেদনকারী শিক্ষার্থী এবং তাদের অবিভাবকরাও উদ্বেগে রয়েছেন। গত ১৮ ও ১৯ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার কথা থাকলেও পরে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে তা ৬ নভেম্বর স্থগিত করা হয়। এ বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষার ‘এ’ ইউনিট প্রধান এবং বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো: আবু তাহের বলেন, “উপাচার্য না থাকায় আমরা বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। সরকার উপাচার্য নিয়োগ দিলে ভর্তি পরীক্ষা, সেমিস্টার ফাইনাল, ফলাফল এবং বেতনসহ মৌলিক সমস্যাগুলো থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।”
গত ২ ডিসেম্বর অধ্যপক ড. মো: আলী আশরাফের মেয়াদ শেষ হলে উপাচার্য পদ খালি হয়। কোষাধ্যক্ষ পদ খালি হয় গত বছরের ২৪ এপ্রিল। আর উপ-উপাচার্যের কথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে বলা থাকলেও এ পর্যন্ত কাউকেই এই পদে নিয়োগ দেয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ এই ৩টি পদ খালি থাকায় বেতন, ভর্তি পরীক্ষা, সেমিস্টার ফাইনাল, ফলাফল এবং আর্থিক সিদ্ধান্তসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আটকে রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো: মজিবুর রহমান মজুমদার জানান, “উপাচার্য নিয়োগের বিষয়ে এখনো পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে কোন নির্দেশনা আসেনি।”