বাংলাদেশি পর্যটকশূন্য কলকাতা, নেতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে
ভারতের ভিসা কড়াকড়িতে বাংলাদেশি পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে সিটি অব জয় কলকাতা। রুপির বিপরীতে কমেছে বাংলাদেশের টাকার মানও। এতে জরুরি প্রয়োজনে যাওয়া বাংলাদেশি পর্যটকরা ভ্রমণ কাটছাঁট করে ফিরছেন নিজ দেশে। যার জেরে প্রভাব পড়েছে কলকাতার অর্থনীতিতে।
মার্ককুইজ স্ট্রিটের একটি কোনায় বসে ২০ বছর ধরে পেয়ারা বিক্রি করেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার আলমগীর মৃধা। বাংলাদেশি পর্যটকরাই তার প্রধান ক্রেতা। ফলে এতোদিন তিন সন্তানকে পড়াশোনা করিয়ে দুই ভাইয়ের সংসারে দিব্যি ভালো চলছিল তার।
তবে গেল কয়েক মাস ধরে তার ব্যবসা প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে। আগে যেখানে দিনে ২৫ কেজি পেয়ারা বিক্রি করতেন, এখন ৮ থেকে ১০ কেজি পেয়ারাও বিক্রি করতে পারছেন না তিনি।
মেডিকেল ও জরুরি প্রয়োজনে ভিসা ছাড়া অন্য ভিসা বন্ধ থাকায় বাংলাদেশি পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে কলকাতা। এতে করুণ অবস্থায় কলকাতা-ঢাকা-কলকাতা রুটের বাস ব্যবসায়ীরা।
আলমগীর মৃধা বলেন, এটা আমার কেন, আশপাশের সব দোকানের একই অবস্থা। বাংলাদেশকে পর্যটকরা আসলেই আমাদের বেচাকেনা বেশি হবে।
এক পরিবহন ব্যবসায়ী বলেন, কলকাতায় এখন কোনো বাংলাদেশি পর্যটকই আসছে না। যাদের পুরানো ভিসা আছে তারাই সীমিত পরসিরে আসা যায়া করছে। আমাদের ব্যবসার খুব সমস্যা হচ্ছে।
এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রুপির বিপরীতে বাংলাদেশের টাকার দাম পতনের ঘটনা। সোমবার কলকাতার বাজারে বাংলাদেশি একশো টাকায় মিলেছে ৬৮ রুপি। টাকার হিসাব মেলাতে না পেরে অনেকেই জরুরি কাজ শেষ করে দ্রুত বাংলাদেশে ফিরছেন। আর যারা রয়েছেন, তারাও পড়েছেন মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে।
কলকাতায় বেড়াতে আসা বাংলাদেশিরা বলছেন যে তাদের এই ভ্রমণ পরিকল্পনায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ বাংলাদেশি মুদ্রার দরপতন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন এই মুদ্রা দরপতন হওয়ার ফলে তারাও ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর মেডিকেল ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভিসা না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে নয়াদিল্লি।