কুমিল্লায় তিন সন্তানের জননীকে হত্যার অভিযোগ

বুড়িচং প্রতিনিধঃ কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার কন্ঠনগর গ্রামে তিন সন্তানের জননী আয়েশা আক্তার (৩০) কে গভীর রাতে হত্যা করে ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন বুড়িচং থানার পুলিশ।
২২ মে ২০১৮ ইং মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জেলার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের পয়াত গ্রামের আবদুল মান্নানের মেয়ে আয়েশা আক্তার কে স্বামীর বাড়িতে হত্যা করে ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে।

নিহতের বাবা আবদুল মান্নান অভিযোগ করে বলেন, ১৫ বছর পূর্বে আয়েশা আক্তার কে একই উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের কন্ঠনগর গ্রামের শরাফত আলীর ছেলে আমিনুল ইসলামের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন। বিবাহের পর তাদের কোল জুড়ে তিনটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। এরপর থেকে স্বামী আমিনুল ইসলাম (৪০) ও শাশুড়ি মনু বেগম প্রায় সময়ই আয়েশা খাতুন কে শারীরিক নির্যাতন করতেন। নির্যাতন করার সময় আমিনুল ইসলাম বলতেন ‘বাবার বাড়িতে চলে যা তুই চলে গেলে আমি আরেকটি বিয়ে করতে পারব, তবুও তকে নিয়ে ঘর করতে চাই না।’ এ্ইভাবে হাউমাউ কান্না করে মেয়ের স্মৃতি কথন তুলে ধরে লাশের পাশে বসে বলছেন আবদুল মান্নান।

নিহতের চাচা জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা দুই গ্রামের সাহেব সর্দারকে নিয়ে কয়েকবার সমাধান করলেও তারা শান্ত হয়নি তাদের নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বেড়ে যাওয়াতে কুমিল্লা কোর্টে এবং থানাতে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আয়েশা আক্তার তিন সন্তান ইসরাফিল, আকরাম, আতিকের মায়া শত নির্যাতন সহ্য করেও স্বামীর বাড়িতে থেকে যান। হঠাৎ মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে কল দিয়ে শশুড় বাড়ির লোকজন আবদুল মান্নানকে বলেন আপনার মেয়ে মারা গেছে লাশ নিয়ে যান। পরে স্থানীয় মেম্বার বাদল খাঁ কে অবগত করলে তিনি পুলিশ কে খবর দিলে এসআই পুষ্প বরণ চাকমা সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে একটি সুরত হাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

এদিকে নিহতের ছোট ছোট তিন ছেলের সাথে কথা বললে তারা বলে আব্বু আম্মু প্রায় সময় ঝগড়া করতেন। নিহতের শশুড়কে ছেলে কোথায় আছে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন আমার ছেলে দুপুরে কাজ করতে গেছে। স্থানীয়রা বলেন, তারা দুইজন প্রায় সময় ঝগড়া করতে দেখা গেছে। আয়েশা আক্তারের মৃত্যু হত্যা না আত্মহত্যা আমরা সঠিকভাবে বলতে পারছিনা।

স্থানীয়রা আরো বলেন, শুক্রবার দিনে স্ত্রীকে মারধর করে অজ্ঞান করেন আমিনুল ইসলাম। পরে আয়েশা আক্তারের মাথায় পানি দিয়ে জ্ঞান ফিরানো হয়। স্থানীয় মেম্বার বাহারুল ইসলাম জহির বলেন, এ ঘটনার সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর জানা যাবে। ছেলেটা ইলেক্ট্রিক্যাল কাজ করে এ ঘটনাটি পত্রিকায় প্রকাশ করে তাকে বিপদে না ফেলার জন্য সাংবাদিক’কে মুঠোফোনে বারণ করেন।

বুড়িচং থানার ওসি মনোজ কুমার দে বলেন, আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছি এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত আমরা সঠিক বলতে পারছিনা। তবে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

আরো পড়ুন