‘সাংবাদিকতা বিভাগ খুলে পাপ করে ফেলেছি’ – কুবি রেজিস্ট্রার
ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) নির্মাণাধীন দ্বিতীয় ছাত্রী হলের (শেখ হাসিনা) নির্মাণকাজ সংশ্লিষ্ট তথ্য জানতে চাওয়ায় সাংবাদিকদের তথ্য না দিয়ে বরং তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মোহাম্মদ আবু তাহের। বুধবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইউএনবি’ এর প্রতিনিধি নাজমুল হাসান, ‘জাগো নিউজ’ এর প্রতিনিধি রেদওয়ানুল ইসলাম এবং আজকের জীবনের প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম খান তার কক্ষে গেলে তাদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে রুম থেকে বের করে দেন।
তিনি বলেন, ‘হলের কাজের গতি নেই, কালকে ক্লাসরুম নাই এগুলো নিয়ে তোমরা খুব লেখালেখি করছ। দুদিন পরপর তোমাদের এই সংকট সেই সংকট নিয়ে তথ্য লাগে। সাংবাদিকতা বিভাগ খুলে পাপ করেছি। তোমাদের যা ইচ্ছা লিখে দাও।’
ভুক্তভোগী সাংবাদিক দুজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ছাত্রীদের বিদ্যমান আবাসন সংকট এবং নির্মাণাধীন দ্বিতীয় ছাত্রী হল নির্মাণে দীর্ঘসূত্রিতা সম্পর্কিত সংবাদের তথ্য সংগ্রহ করতে রেজিস্টারের দফতরে যান। সাংবাদিক নাজমুল হাসান জানান, রেজিস্টারের কাছে ছাত্রী হল নির্মাণে দেরির কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হয় দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য। কিন্তু তারা জনবল সংকটসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে থাকে। ফলে প্রশাসন চাইলেও কাজ দ্রুত হয় না।এরপর রেজিস্টার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের বলেন, পরিকল্পনা শাখা ভালো বলতে পারবে।
পরে তারা দুজন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দফতরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিণের কক্ষে যান। শাহাবুদ্দিন তাদের জানান, মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাকের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘জেবিসিকে’ নামক প্রতিষ্ঠান ছাত্রী হল নির্মাণের কাজটি করছে। কত তারিখ থেকে তারা এই হলের টেন্ডার পেয়ে কাজটি করছে তা জানতে চাইলে শাহাবুদ্দিন তাদের বলেন, তথ্য দিতে হলে তাকে রেজিস্টারের কাছে যেতে হবে। রেজিস্টারকে না জানিয়ে তথ্য দেওয়ার নিষেধ আছে। সাংবাদিক রেদোয়ানুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের নিয়ে পরিচালক শাহাবুদ্দিন রেজিস্টারের কক্ষের দিকে যান। কিন্তু আমাদের বাইরে অপেক্ষায় রেখে পরিচালক শাহাবুদ্দিন এবং রেজিস্টার প্রায় ৩০ মিনিট কথা বলেন।’ কক্ষে প্রবেশের পর তিনি রাগান্বিত হয়ে যান। বলেন, গাছতলায় নাকি ক্লাস নিয়েছে, সেটার আবার ছবি তুলে নিউজও হয়েছে।’ এরপর তিনি ধমক দিয়ে বেরিয়ে যেতে বলেন তাদের।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শতাব্দী জুবায়ের বলেন, “প্রেস ক্লাবের সদস্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার রূঢ় ব্যবহারের ঘটনায় ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে তার সাথে দেখা করেছি। একজন সংবাদকর্মীর সাথে তিনি এমন দুর্ব্যবহার করতে পারেন না।
এ প্রসঙ্গে রেজিস্ট্রার ড. মো: আবু তাহের বলেন, ‘আমি যে সকল সাংবাদিকদের সাথে রূঢ় ব্যবহার করেছি তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন